ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

যাদের দেশপ্রেম থাকবে তারা বিদেশে টাকা পাচার করবে না ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ৪ অক্টোবর ২০১৯

যাদের দেশপ্রেম থাকবে তারা বিদেশে টাকা পাচার করবে না ॥ ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্যাসিনো-জুয়া নিয়ে বিএনপিকে দোষারোপ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্যন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘১০ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে যা করেছে, সেই সবের ক্রেডিটও তারা বিএনপিকে দিতে চায়। বিএনপি অনেক কিছু করতে পারে। কিন্তু বিগত দশ বছর তারা ক্ষমতায় নাই। এই সময়ে যা হয়েছে সেটাও বিএনপি করেছে, এই অভিযোগ গ্রহণযোগ্য না। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় সরকারের অপরিহার্যতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ক্যাসিনো বিএনপির সময়ে হয়েছিল, আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, আমিতো বিএনপির সমর্থক ছিলাম না। আমিও তাদের সমালোচনা করেছি। যারা যে অপরাধের জন্য দায়ি তাদের সে দগায় নিতে হবে। নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপালে কেউ তা মেনে নেবে না। ড. কামাল বলেন, আজকের সভায় কেউ কোনো দ্বিমত পোষণ করেননি। সবাই একই কথা বলেছেন। দেশের অবস্থা নিয়ে সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ধর্ষণের পর হত্যা, আইনের শাসন অনুপস্থিত, প্রমাণ দিতে বেশি কিছু লাগে না। পত্রিকাগুলো খুলে দেখেন, ঘটনাগুলো ক্রমাগত ঘটছে। এই সরকারকে তো আমরা ভোট দেইনি। তাদের এই কার্যকলাপের জন্য আমরা তাদের প্রত্যাখান করতে বাধ্য। সেটা নিয়ে কোনো দ্বিমতের প্রয়োজন নেই। এখানে কেউ দ্বিমত করবেও না। তিনি বলেন, দেশের শাসন ব্যবস্থাকে নষ্ট করছেন, ভোট হতে দেননি। ৩০ ডিসেম্বর কেউ ভোট দিয়েছিলেন? আমি একজনও খুঁজে পাচ্ছি না যে ভোট দিয়েছিল। আপনারা পেলে তার ফোন নম্বর আমাকে দেবেন। অনেকে আমাকে বলেছেন ইলেকশন হয়েছে সেটা জানেও না। ‘এই জিনিসটা থেকে আল্লাহ আমাদেরকে মুক্ত করুক। আল্লাহ বলেছে কিছু চাইলে তোমাদের সংহতি হতে হবে। আজকে জুম্মার দিন, আপনারা যেভাবে কথা শুনছেন এবং শুনে মাথা নাড়াচ্ছেন, আমি বিশ্বাস করি আপনাদের মধ্যে সেই ঐক্যমত আছে যে দেশকে বাঁচাতে হবে। আমাদের কে বাঁচাবে? বাইরে থেকে কেউ বাঁচাবে না, আমাদেরকেই বাঁচাতে হবে। স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি। স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে ক্ষমতা জনগণের হাতে এনে নিজেদের ভবিষ্যত আমরা সবাই মিলে করবো। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি উচিত কথা যেগুলো বলা হয়েছে এটা সবাই প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দেখছেন। দুর্নীতি কোন জায়গায় চলে গেছে। অর্থনীতি কীভাবে ধ্বংস হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। বিশেষ করে ব্যাংকিং সিস্টেমকে যেখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এ নিয়ে বেশি বলতে চাই না, এতে আরও ক্ষতি হবে। পত্র-পত্রিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পত্রিকায় বের হচ্ছে। এই যে রেকর্ড পরিমাণ টাকা বাইরে পাঠানো হচ্ছে, কারা পাঠাচ্ছে? যাদের দেশপ্রেম থাকবে, দেশের প্রতি আস্থা থাকবে, তারাতো এভাবে বিদেশে টাকা পাঠাবে না। সরকারকে বলতে চাই- এগুলো তদন্ত করুন, কে করেছে, কেন করেছে। সরকারের যদি অনুমতি না থাকে, তাহলে মানুষ ওইভাবে বাইরে টাকা পাঠাতে পারে না। এই লোকগুলো হাতেগোনা। জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, নাগরিক ঐক্য’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শাহ আহমেদ বাদল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ।
×