ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

জাবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ছয়

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ছয়

জাবি সংবাদদাতা ॥ সোমবার দুপুর দুইটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনের সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মোট ছয়জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত সাব্বির হোসেন নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণী (৪৪ তম ব্যাচ) ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় জাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফনান হোসেন আপন (অর্থনীতি, ৪১ ব্যাচ), সহ-সম্পাদক নাজিমুল বরণ (অর্থনীতি, ৪২ ব্যাচ), জাকির (দর্শন, ৪৬ ব্যাচ), নাজমুল (দর্শন, ৪৫ ব্যাচ), জাহিদকে (প্রাণিবিদ্যা, ৪৭ ব্যাচ) অভিযুক্ত করে এবং তাদের বিচার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে শহীদ রফিক জব্বার হলের আহত শিক্ষার্থীরা। অভিযোগপত্রে তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দুপুর দুইটায় এক ভতিৃচ্ছুকে নিয়ে পরীক্ষকেন্দ্রে পৌছে দিতে কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনের সামনে যায় সাব্বির হোসেন। সাব্বির পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে গেলে দর্শন বিভাগের ৪৬ ব্যাচ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জাকির হোসেন তাদের দোকানে টাকার বিনিময়ে মোবাইল ও ব্যাগ রাখার জন্য জবরদস্তি করে। এতে প্রতিবাদ করলে সে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সহকারী প্রক্টর রনি হোসেন তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফনান হোসেন আপন (অর্থনীতি, ৪১ ব্যাচ) ও সহ-সম্পাদক নাজিমুল বরণের (অর্থনীতি, ৪২ ব্যাচ) ইন্ধনে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র জাহিদ (৪৭ ব্যাচ) তাদের উপর কাচের বোতল দিয়ে আঘাত করলে সাব্বিরের মাথা ফেটে যায়। আহত অন্যান্যরা হলেন জোবায়ের আহমেদ (সরকার ও রাজনীতি, ৪৫ ব্যাচ), রাকিব (বাংলা, ৪৫ ব্যাচ), সোহেল রানা (ভূগোল ও পরিবেশ, ৪৫ ব্যাচ), আহসান ফাহিম (প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান, ৪৫ ব্যাচ), কামরুল হাসান শাওন (নৃবিজ্ঞান, ৪৪ ব্যাচ)। আহতরা সবাই বিশ্বদ্যিালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রক্টরিয়াল টিমের দুই সদস্য রনি হোসেন ও আকলিমা আক্তারের সামনেই উভয় হলের শিক্ষার্থীরা মারামারিতে জড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহত সাব্বিরকে বিশ^বিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মন্ডল বলেন, ‘ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের কর্মী আহত হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়েছি। আজকের মধ্যে বিচার না পেলে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়া হবে।’ এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আফনান হোসেন আপন বলেন, ‘শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির কথায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমি কোনোভাবে মারধরের সাথে জড়িত নই।’ ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এমনটি করতে পারেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘আমি তাৎক্ষণিকভাবে দ্ইু হলের নেতাদের পরিস্থিতি ঠান্ডা রাখার জন্য বলি। এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির দৃষ্টিতে ছাত্রলীগের কেউ অভিযুক্ত হলে তাদেরকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন এ ধরণের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা কাম্য নয়। মারামারির এ ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
×