স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামী ১২ জুন থেকে। ওইদিন মিলবে ২১ জুনের টিকেট। আর ফিরতি টিকেট বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে ১৯ জুন থেকে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। একই দিন থেকে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বাস যাত্রীদের জন্যও অগ্রিম টিকেট বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। ২২ জুন থেকে ঈদের স্পেশাল সার্ভিস চালু করবে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি। এবারের ঈদে ৯০০ বাস বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করবে বলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
রেলের অগ্রিম টিকেট বিক্রির দিন ঠিক করতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় রেলভবনের সভাকক্ষে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক। সূত্রে জানা গেছে, ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে এবার ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা হয়েছে বগি। এতে বাড়ছে আসন সংখ্যা। ঈদ এলেই পেটের দায়ে ঢাকায় থাকা মানুষজনের মন টানে বাড়ি যাওয়ার। আর নিরাপদে ঈদযাত্রাই হলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। নিরাপদ ও আরামদায়ক হওয়ায় বাড়তি চাপ পড়ে ট্রেনের ওপর। অর্থাৎ ঈদে বাড়ি ফিরতে সবার প্রথম পছন্দ ট্রেন যাত্রা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও দশ দিন আগে থেকে শুরু হবে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি। ১২ জুন বিক্রি হবে ২১ জুনের টিকেট। ১৩ জুন পাওয়া যাবে ২২ জুনের টিকেট। এভাবে পর্যায়ক্রমে টিকেট মিলবে ২৫ জুন পর্যন্ত। ৩০ রোজা হলে ২৬ জুনের টিকেট বিক্রি হবে ১৭ জুন। ফিরতি টিকেট মিলবে ১৯ জুন থেকে। প্রতিদিন সকাল আটটায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে শুরু হবে টিকেট বিক্রির কার্যক্রম। চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। তবে আজকের বৈঠকে সময়সূচী কিছুটা পরিবর্তন হতেও পারে।
কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, আশা করি, টিকেট পেতে যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না। যতক্ষণ হাতে টিকেট থাকবে ততক্ষণ বিক্রি হবে। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫৩ হাজার টিকেট বিক্রির সক্ষমতা রয়েছে আমাদের।
বাসের টিকেট
দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা ঈদ উপলক্ষে আগামী ১২ জুন থেকে বাসের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। ইতোমধ্যে পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠকে এ তারিখ থেকে টিকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে মহাখালী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিবছরের মতো এবারও বাসের কোন অগ্রিম টিকেট বিক্রি হবে না। এদিকে এবারের ঈদে বাসযাত্রীদের টিকেটের চাহিদা বেশি ২৩ ও ২৪ জুনের। বাস মালিকরা জানিয়েছেন, এখন থেকেই কাউন্টারে খোঁজ নিতে শুরু করেছেন যাত্রীরা। অনেকেই অগ্রিম টিকেট বুকিং দেয়ারও চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল জনকণ্ঠকে জানান, ইতোমধ্যে আমাদের সমিতির বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সবাই দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকেট বিক্রির পক্ষে মতামত তুলে ধরেছেন। তাই ১২ জুন থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে। সকাল ৯টা থেকে দিনভর টিকেট বিক্রির কথা জানান তিনি।
সোহাগ পরিবহনের কর্ণধার সোহেল বলেন, আমাদের কাছে যতক্ষণ টিকেট থাকবে ততক্ষণ বিক্রি হবে। টিকেট কালোবাজারি ও বাড়তি ভাড়া রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। বলেন, কোন বাস কোম্পানি যদি বাড়তি ভাড়া আদায় করে তবে সমিতির পক্ষ থেকে কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মহিলাদের জন্য পৃথক বুথ স্থাপনের কথাও জানান তিনি।
বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই আগামী ১২ জুন থেকে বাসের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু করা হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য পরিবহন মালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এবার রাস্তাঘাট ও বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিপর্যয় হতে পারে। তবে টিকেট পেতে কারও খুব একটা বেগ পেতে হবে না। গাবতলী ও সায়েদাবাস বাস টার্মিনাল এবং কল্যাণপুর, আসাদগেট, আরামবাগ ও মৌচাকে অবস্থিত বিভিন্ন আন্তঃজেলা বাসের কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকেট পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, কোনভাবেই ঈদ উপলক্ষে পরিবহনের ভাড়া বাড়বে না। এছাড়া প্রতি বাসে দুটি করে টিকেট রিজার্ভ রাখা হবে।