স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ লেকের স্বচ্ছ জলে মুখ লুকিয়েছে নীল আকাশ। চার পাড়ের সবুজ বনানী মেলেছে সবুজ ডানা। সবুজ আর নীলের মধ্যে লেকের বুক চিরে দাঁড়িয়ে আছে ঝুলন্ত সেতু। অসাধারণ সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। একবার তাকালে চোখ ফেরানো যায় না। পাখির কলরবে মুখরিত চারিপাশ। এ যেন নতুন করে অরণ্যের মাঝে ফিরে আসা। কক্সবাজারের পাশে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন লেক। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সবুজ বেষ্টিত নাইক্ষ্যংছড়ির প্রাণ কেন্দ্রে জেলা পরিষদ ডাক বাংলো ঘেঁষে প্রায় আধা কিলো মিটার দীর্ঘ কার্পোটিং সড়ক যুক্ত প্রাকৃতির অপরূপ শোভায়শোভিত উপবন লেকটি অবস্থিত। এ লেকের পানি ব্যবহার করছে সরকারী কর্মকর্ত-কর্মচারী সহ প্রায় ৫-হাজার স্থানীয় বাসিন্দা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম শাহেদুল ইসলামের উদ্যোগে এই লেক আরও বেশী সৌন্দর্য করে তুলতে পাহাড়ের চূড়ায় উন্নত য়াতায়াত ব্যবস্থা, পরিবেশ বান্ধব কুঠির তৈরী ও ঝুলন্ত ব্রিজকে সংস্কার করা হয়েছে। যাতে পর্যটকদের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়। সৌন্দর্য্যমন্ডিত করে তুলতে দৃষ্টিনন্দন সারি সারি বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ পাতার গাছ লাগানো হয়েছে লেকের চারদিকে। এখানে রয়েছে পাহাড়কন্যা নাইক্ষ্যংছড়ির মনোরম ছায়ানিবিড় সৌন্দর্য অবলোকনের সুযোগ। যা ভ্রমনার্থীদের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। এ লেকে এখন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা উপজেলা পরিষদ থেকে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করে বড়শি দ্বারা মাছ ধরতে ভিড় করছে প্রতিদিন। শৌখিন মৎস্য শিকারিরা ধরছে বিশাল বিশাল মাছ। এ লেকে প্রায় ৬৮ কেজি ওজনের মাছও রয়েছে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহেদুল ইসলাম। এ উপজেলাতে উপবন লেক ছাড়াও বিনোধনের জন্য বাংলাদেশ প্রাণি সম্পদ গবেষণা ইনষ্টিটিউট, বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠা কুমির প্রজনন কেন্দ্র, উপজেলার হর্টিকালচার সেন্টার, দেশের বৃহৎ রাবার বাগান, আশারতলী গ্রামের চা-বাগান, সদর ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ির সোসং ও কোয়াসং ঝর্ণা অন্যমত। নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন লেকের চারপাশে বাঙ্গালী ও পাহাড়ি অধিবাসীদের বসতি দেখে পর্যটকদের মন জুড়িয়ে যায়। সারি সারি কাঠের বাড়ি আর তাদের ভাষা-সংস্কৃতি আদি এ জনগোষ্ঠির জীবন চিত্রের ভিন্নতা তুলে ধরেছে সকলের কাছে। আসলেই নাইক্ষ্যংছড়ির লেকটি খুবই সুন্দর। ঝুলন্ত ব্রিজের পাশেই ছোট্ট একটি উপজাতীয় রাখাইন পল্লী। পর্যটকদের আর্কষণের অন্যতম উপকরণ দীর্ঘ এ লেক। বাশের বেড়া-খড়ের ছাউনিযুক্ত ছোট ছোট পরিবেশ বান্ধব বিশ্রাম ঘর, আর উচুঁ-নিচু পিচঢালা পথ। বিশেষ করে লেকের পাশে উচুঁ চূড়ায় উঠলে নাইক্ষ্যংছড়ি দেখতে খুবই দারুণ।