ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

নারী নিগ্রহ ও ভিন্ন কৌশলে ব্যবহার

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫

নারী নিগ্রহ ও ভিন্ন কৌশলে ব্যবহার

আইএস একদিকে নারীদের দলে টানছে অন্যদিকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছে ভিন্ন গোষ্ঠীর নারীদের। পারিবারিক আবহে বীতশ্রদ্ধ, জীবন নিয়ে হতাশ, নতুন কিছু করার স্বপ্নে বিভোর পশ্চিমা বিশ্বের মেধাবী কিশোরীরা জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএসের সহজ লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছে। জিহাদী হিসেবে তারা আইএসের নতুন শক্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। মেধার দিক দিয়ে আইএসের অনেক পুরুষকর্মীদের চেয়েও অনেক বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন ওই মেয়েরা। সম্প্রতি ইরাক ও সিরিয়ায় ভ্রমণ করা ৪ হাজার পশ্চিমা নাগরিকদের মধ্যে সাড়ে ৫শ’-এরও বেশি নারী ও কিশোরী জঙ্গী সংগঠন আইএসে যোগ দিয়েছে। ১৭ আগস্ট দি নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, বসনিয়া, আফগানিস্তান ও ইরাকে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার নামে লড়াইয়ে এতদিন পর্যন্ত শুধু পুরুষরাই যোদ্ধা হিসাবে আইএসে যোগ দিত। ওই যুদ্ধক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল না বললেই চলে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রয়েছেন পশ্চিমা দেশের নাগরিক। নানাভাবে কিশোরীদের আইএস প্রলুব্ধ করে সংগঠনে যুক্ত করছে। বিশ্বদখলে আইএসের নৃশংসতায় যুদ্ধক্ষেত্রের চেয়ে ওই নারীদের বেশিরভাগকে স্ত্রী, মা, নিয়োগকর্মী এবং কখনো কখনো অনলাইন সহিংসতার চিয়ারলিডার্সের ভূমিকাতেই বেশি দেখা যাচ্ছে। প্রতিবেদনে গত ফেব্রুয়ারি মাসে লন্ডন থেকে তিন কিশোরীর সিরিয়ায় গিয়ে আইএসে যোগ দেয়ার ঘটনাও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়। তিন কিশোরীর একজন খাদিজা সুলতানা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্তও তার মা জানতো না বিষয়টি। ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুলের ছুটিতে ১৬ বছরের খাদিজা তার এক বন্ধু ও ভাগ্নির সঙ্গে নাচানাচি, দুষ্টুমি করছিল। বাবা-মারা যাওয়ার পর খাদিজা তার মায়ের একদম বাধ্য মেয়েতে পরিণত হয়। বাসা ছেড়ে যাওয়ার আগের দিন নিজের রুম ছেড়ে রাতে মায়ের সঙ্গে শুয়েছিল খাদিজা। সকালে লাইব্রেরিতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় ফেরার কথা থাকলেও সাড়ে ৫টার মধ্যেও যখন খাদিজা ফিরে আসেনি তখনই মায়ের দুশ্চিন্তা শুরু হয়। খাদিজার সেলফোনে তার বড় বোন হালিমা খানম মেসেজ পাঠিয়ে কোন জবাব পান না। লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখেন সেখানে খাদিজা নেই। স্কুলেও নেই। পরে তাদের মা রুমে গিয়ে খাদিজার ওয়ার্ড্রোব খুলে দেখতে পান কাপড় নেই, প্রয়োজনীয় বেশকিছু জিনিস নেই, দুটো ব্যাগও নেই। তার বোঝার বাকি থাকে না ধীরে ধীরে সবকিছু গুছিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে খাদিজা। পরদিন পুলিশে রিপোর্ট করেন মেয়ের নিরুদ্দেশের। পুলিশের ধারণা হয় খাদিজা দুই বান্ধবীর সঙ্গে তুরস্ক বেড়াতে গেছে। খাদিজার বোন জানায় তার মনে একবারও উঁকি দেয়নি সিরিয়ার কথা। পরে তারা নিউজে দেখে জানতে পারেন খাদিজা সিরিয়ায় চলে গেছে। নিউজে গ্রেইনি সিকিউরিটি ক্যামেরা ফুটেজে দেখানো হয়েছিল, খাদিজা তার ১৫ বছর বয়সী দুই বান্ধবী শামীমা বেগম ও আমিরা আবাসির সঙ্গে ধীরে ধীরে বিমানবন্দরের সিকিউরিটি পার হচ্ছে। তারা তুরস্কের একটি বিমানে করে প্রথমে ইস্তানবুল এবং পরে বাসে করে সিরিয়া পৌঁছায়। ওই তিন কিশোরী রীতিমতো পরিকল্পনা করে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় তাদেরই এক বন্ধু। যে ইতোমধ্যে ইসলামিক স্টেটের দখলে থাকা অঞ্চল ঘুরে গেছে। ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক ডায়লগের প্রতিবেদন ও ডেটাবেজ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন মেয়েদের নিয়ে আইএস একটি প্রোফাইল অনুমোদন করেছে। তাদের মুসলিম হিসেবে অন্য চোখে দেখা হয়। অমুসলিম আখ্যা দিয়ে যেভাবে ইয়াজিদি গোষ্ঠীর মেয়েদের ধর্ষণ করা হয় এবং যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করা হয়, ওই মেয়েদের তা থেকে ভিন্নভাবে দেখা হয়। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে আসা খাদিজাদের মতো মেয়েদের জন্য একটি ম্যারেজ ব্যুরোও পরিচালনা করা হয়। চলতি বছর আইএসের মিডিয়া শাখা একটি ইশতেহার প্রকাশ করেছে যে, মেয়েরা ১৫ বছর বয়সে তাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করতে পারবে। আর তারা ৯ বছর বয়স থেকেই বিয়ে করতে পারবে। পাশাপাশি আইএসে প্রবেশ করা নারীদের সম্মানিত হিসেবেও প্রশংসা করা হয়। আইএসের স্বঘোষিত খলিফা আবু বকর আল-বাগদাদী ইরাকী বংশোদ্ভূত এক জার্মান তরুণীকে তার তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেছেন। ওই স্ত্রীকে খেলাফতের নারীবিষয়ক ইস্যু দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আইএসে যৌনদাসত্ব ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার নামে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএসের সদস্যরা মেতে উঠেছে বিকৃত যৌনাচারে। বিশ্বব্যাপী আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে অগাধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি এখন শিশু-কিশোরী ধর্ষণের মাধ্যমে সংগঠনটির লোলুপ দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট রূপ পেয়েছে। সংগঠনটির ক্যাম্পগুলোতে ধর্মীয় পাঠ চর্চার পরিবর্তে নিয়মিত চলে অপহৃত নারীদের ধর্ষণ। তাদের বিক্রি করে দেয় যৌনদাসী হিসেবে। ভিন্ন ধর্মের নারী শিশুদের ধর্ষণ মানে ‘আল্লাহকে সন্তষ্ট করা’ এমন উদ্ভট বিকৃত এবং ভয়াবহ মানসিকতা তারা নির্বিকারভাবে ছড়িয়ে তাদের অসুস্থ দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করে চলেছে। ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমসে আইএস ক্যাম্পে অবাধ যৌনচারের শিকার শিশু-কিশোরী নিয়ে প্রকাশিত সচিত্র অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ধর্মের দোহাই দিয়ে যৌন দাসত্বের ভয়াল দৃশ্য। ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা ২১ জন কিশোরী ও নারীর বয়ানে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তাদের ওপর নিত্যদিন চলা নির্যাতনের তথ্য। পালাতে সক্ষম হওয়া ১২ বছরের একটি কিশোরী ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমসে দেয়া সাক্ষাতকারে জানিয়েছে, তাকে ধর্ষণ করা ব্যক্তিটি ধর্ষণের আগে পরে প্রার্থনা করত। মেয়েটি এ কষ্ট থেকে তার কাছে মুক্তি চাইলে সে বলত ইসলাম ধর্ম অনুসারে সে ইসলামে অবিশ্বাসী অন্যের ধর্মের মেয়েকে ধর্ষণ করতে পারে। বরং বিধর্মীকে ধর্ষণের মাধ্যমে সে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করছে। ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মেয়েটি ১১ মাস আগে পালাতে সক্ষম হয়। বর্তমানে সে আন্তর্জাতিক শরণার্থী শিবিরে তার পরিবারের সঙ্গে রয়েছে। এক বছর আগে আইএসের হাতে অপহরণের শিকার হওয়া ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের ১৫ বছর বয়সী আরেক কিশোরীও একই তথ্য দিয়েছে। তাকে এক ইরাকী যোদ্ধার কাছে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়। গত এপ্রিল মাসে সে পালাতে সক্ষম হয়। ওই কিশোরী জানায়, তাকে নিয়মিত ধর্ষণ করা হতো। আর প্রত্যেকবারই ওই ব্যক্তি নামাজের ভঙ্গিতে প্রার্থনা করত। লোকটি তাকে বলত এর মাধ্যমে সে ‘ইবাদত’ করছে। মেয়েটি তাকে বলে, ‘তুমি আমার সঙ্গে যা করছ তা অন্যায়। এসব করে তুমি ঈশ্বরের নৈকট্য পাবে না।’ জবাবে লোকটি তাকে বলে, ‘এটা স্বীকৃত। এটা হালাল।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএস ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মেয়েদের দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যৌন দাসের ব্যবসা প্রথমে শুরু করে ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট থেকে। ইরাকের উত্তরাঞ্চলে এই ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের বসবাস। ৩৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ ইরাক। মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ হচ্ছে ইয়াজিদি। আইএস ওই ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের গ্রামগুলো দখল করে নেয়ার পরপরই সম্প্রদায়ের নারী পুরুষদের আলাদা করে ফেলে। নারীদের মধ্যে আবার আলাদা করে নেয়া হয় শিশু কিশোরী ও অবিবাহিতদের। যৌন ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয়ের লক্ষ্যে আইএস একটি শক্ত অবকাঠামো তৈরি করেছে। ইয়াজিদি মেয়েদের প্রথমে নেয়া হয় বন্দীশিবিরে। তারপর তাদের নেয়া হয় পরিদর্শন ঘরে। সেখান থেকেই চলে পণ্যের মতো নারীদের বাজারজাতকরণ। গত বছর ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মোট ৫ হাজার ২৭০ জনকে অপহরণ করা হয়। এদের মধ্যে ৩ হাজার ১৪৪ এখনও বন্দীশিবিরে। আইএস নিজেদের পরিচালিত ইসলামী আদালতের মাধ্যমে মেয়েদের বিক্রয় চুক্তিকে বৈধতা দিয়ে যৌনদাসত্বের ব্যাপারে বিস্তারিত নীতিমালা তৈরি করেছে। আইএসের গবেষণা ও ফতোয়া বিভাগ গত মাসে যৌনদাসত্বের নির্দেশনা বিষয়ক ধর্মীয় একটি নীতিমালা তৈরি করে তা জারি করেছে। বারবারই আইএস নেতারা কোরআনের বাণীর একাংশকে তুলে ধরে নিজেদের মতো করে সংকীর্ণ ও অপব্যাখ্যা করে আসছে। তারা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী কোরআনের পবিত্র বাণীর নির্ধারিত কিছু অংশ তুলে ধরে তাদের সেইসব সহিংসতাকে বৈধতা দিয়েছে নীতিমালার মাধ্যমে। এমনকি তারা যৌন আকাক্সক্ষা চরিতার্থের জন্য এ ধরনের যৌনাচারকে আধাত্মিক লাভ ও পুণ্য অর্জনের অংশ বলে প্রচার চালাচ্ছে। ৩৪ পৃষ্ঠার ওই নীতিমালায় গর্ভবতী ছাড়া ভিন্ন ধর্মের সব বয়সী দাসীদের সঙ্গে যৌনাচারের বৈধতা দেয়া হয়েছে। ১৫ বছরের ওই কিশোরী জানায় কিভাবে তার পরিবার আইএস জঙ্গীদের আক্রমণের শিকার হয়েছিল। সে বলে, ‘ পুরো পরিবার নিয়ে আমরা পালানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ভারি অস্ত্রে সজ্জিত আইএস যোদ্ধারা আমাদের ঘিরে ফেলে। আমি, আমার মা, ১৪, ৭ ও ৪ বয়সী চার বোন অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকি। প্রথমেই তারা পুরুষ ও নারীদের আলাদা করে ফেলে। আমাকে আমার মা ও বোনদের সঙ্গে একটি ট্রাকে তোলা হয় প্রথমে। মাউন্ট সিনজার শহরের কাছাকাছি আসার পর আমাকে মা ও বোনদের কাছ থেকে আলাদা করে ফেলা হয়। একজনের কোলে আরেকজনকে গাদাগাদি করে ভরা হয় বাসে। সাদা রঙের বাসের গায়ে লেখা ছিল ‘হাজী’ শব্দটি। প্রতিবছর মক্কায় হজ পালনের জন্য যাওয়া হাজীদের এই বাসে বহন করা হয়। কম বয়সী ও অবিবাহিত মেয়েদের সঙ্গে আমাকে ওই বাসে জোর করে তোলা হয়।’ ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ৬ ঘণ্টা যাত্রার পর প্রথমে মসুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি মেয়েদের গ্রুপের সঙ্গে তাকে গ্যালাক্সি ওয়েডিং হলে রাখা হয়। অন্য গ্রুপের মেয়েদের নিয়ে তোলা হয় সাদ্দাম হোসেনের শাসন সময়ের বাদুশ জেলখানা, যুব ভবনে। তাছাড়া ইরাকের তাল আফার, সোলাহ, বা’আজ, সিনজার শহরের এলিমেন্টারি স্কুল ও পৌর ভবনেও অনেক মেয়েদের বন্দী করে রাখা হয়। সেসব স্থানে তাদের কয়েকদিন, কয়েক মাস রাখার পর ছোট ছোট গ্রুপে বাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সিরিয়া বা ইরাকের ভেতরেই অন্য কোন জায়গায়। এরপর যৌনদাসী হিসেবে মোটা অর্থের বিনিময়ে তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়। মেয়েদের নাম, বয়স এবং বিয়ে হয়েছে কী না, বাচ্চা আছে কী না এসব তথ্য একটি নিবন্ধন বইয়ে তুলে নেয়া হতো। ছোট ছোট দলে মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হতো অন্য কোথাও। যেই মেয়েরা যেতে চাইতো না তাদের চুল ধরে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হতো। কমবয়সী সুন্দর চেহারার মেয়েরা এক সপ্তাহের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যেত। আর বেশি বয়সী বিবাহিত মেয়েদের মাসের পর মাস বিক্রির জন্য সাবায়া মার্কেট বা দাসবাজারে উপযুক্ত ক্রেতার কাছে বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হতো। কিশোরী মেয়েটি জানায়, তাকে দুই মাস পর একটি ছোট গ্রুপের সঙ্গে বাসে করে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেমে সে প্রথমে শুনতে পায় কয়েকজন যোদ্ধা হর্ষধ্বনি দিয়ে তাকে ডাকছে সাবায়া নামে। প্রথমে সে জানতো না এর অর্থ। পরে এক আইএস যোদ্ধার কাছে জানতে পারে সাবায়া অর্থ দাসী। ওই যোদ্ধা তাকে জানায়, ইয়াজিদি সম্প্রদায় তাউস মালিকের (ইয়াজিদিদের বিশ্বাস অনুসারে সাত দেবতার একজন) উপাসনা করে। ওই যোদ্ধার মতে, তাউস একজন শয়তান। তাই ওই শয়তানের অনুসারীরা তাদের দাসী। তারা এখন তাদের বিক্রি করতে পারে। যা খুশি তাই করতে পারে। অপহৃত মেয়েদের বিব্রতকর প্রশ্নও করা হতো। তাদের শেষ মাসিক কবে হয়েছিল তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করা হতো। তারা বুঝতে চাইতো মেয়েটি গর্ভবতী কী না। কারণ তারা বুঝতে চাইতো যোদ্ধারা মেয়েটির সঙ্গে তাৎক্ষণিক যৌনাচারে যেতে পারবে কী না। সেক্ষেত্রে তাদের তৈরি শরীয়াহ আইন উল্লেখ করে তারা বলতো, গর্ভবতী দাসীর সঙ্গে যৌনাচার করা যায় না। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ২১ জনের মধ্যে একজন ছিলেন যিনি ওই সময়ে গর্ভবতী থাকার কারণে ধর্ষণের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। ৩৪ বছর বয়সী ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের আরেক নারী জানান, সিরিয়ার শাহাদাদি এলাকায় এক সৌদি যোদ্ধার দাসী ছিলেন তিনি। ওই লোক ১২ বছর বয়সী আরেক দাসী কিনে আনার পর তিনি ধর্ষণের হাত থেকে মুক্তি পান। ওই শিশুটি কম বয়সী হওয়ার কারণে ধর্ষণের ফলে ইনফেকশনের শিকার হয়। এরপরও শিশুটি নিস্তার পায়নি। ওই নারীর অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও শিশুটির চিকিৎসা না করে নিয়মিত ধর্ষণ করত লোকটি।
×