ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

একাত্তরের ইতিহাস যারা অস্বীকার করতে চায় তাদের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করা উ

একাত্তরের ইতিহাস যারা অস্বীকার করতে চায় তাদের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করা উ

একাত্তরের ইতিহাস যারা অস্বীকার করতে চায়, তাদের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, দেশে আজ যে সংকট তার সমাধান হলো গণতান্ত্রিক উত্তরণ।  শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মঈন খান বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু সরকার বা রাজনৈতিক দল নয়, গণমানুষকেও সচেতন থাকতে হবে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ঘটনা এবং ৫ আগস্ট দেশের যে পরিবর্তন এসেছিল, তার ৯ মাস পর দেশ এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে এসে দাঁড়ালো আমি জানতে চাই। কিছু ঐতিহাসিক সত্য রয়েছে, যা কখনো অস্বীকার করা যাবে না। সময়ের বিবর্তনে হয়ত তার গুরুত্ব কমে যায়। ড. মঈন খান বলেন, বিশ্বের কোনো সংবিধানে কিন্তু খারাপ কথা লেখা থাকে না। দেশে ’৭২ সালের পর ’৭৫ সালে একটা সংবিধান এসেছিল। সে সময় সংবিধানে একটি সেকশন যুক্ত করা হয়েছিল, যার ফলাফল ছিল বাকশাল। পরে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সেসব ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।  মঈন খান বলেন, গণতন্ত্র সঠিকভাবে প্র্যাকটিস করা হলে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে পাঁচ বছর পর পর জনগণের সামনে পরীক্ষা দিতে হবে। রাজনীতিবিদদের পরীক্ষা হলো নির্বাচন। সে নির্বাচনে যদি কারচুপি হয়, তা হলে সে পরীক্ষা থেকে বাদ। বলা হয় যে, অনেক নির্বাচনের মাধ্যমেও দেশ নাকি সঠিক পথে আসতে পারেনি। আমি বলতে চাই, বিগত ১৫ বছর দেশে কোনো নির্বাচনই হয়নি। দোষটা নির্বাচনের নয়, দোষটা তাদের যারা নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন। মঈন খান বলেন, একটি কথা আছে, তা হলো গণতন্ত্র একটি খারাপ ব্যবস্থা। কিন্তু গণতন্ত্র ছাড়া আর বাকি সব ব্যবস্থা আরও বেশি খারাপ। এই সত্যটি উপলব্ধি করেই ১৯৭১ সালে লাখ লাখ মানুষ গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন। 

adbilive
adbilive
জনগণের আস্থা ফেরাতে সংস্কার ও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দিন

জনগণের আস্থা ফেরাতে সংস্কার ও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা সরকারের কাছে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেছিলাম। সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সরকারের প্রতি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করছি। এরপর আমাদের দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের সুষ্ঠু বিচার। এ বিচার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ। তবে জাতির কাছে বিশ্বাসযোগ্য বিচারকার্য অনতিবিলম্বে দৃশ্যমান হতে হবে। শনিবার সকালে রাজধানী ঢাকার মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার ষান্মাসিক অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে একথা বলেন ডা. শফিফুর রহমান।  তিনি বলেন, স্বাধীনতার মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের এই দীর্ঘ পরিক্রমায় জাতির মূল প্রত্যাশার অনেকগুলো আজও অপূর্ণ থেকে গেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হয়নি। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মর্যাদাপূর্ণ হেফাজত সংরক্ষণ করতে পারেননি। গত ১৫ বছরের শাসকগোষ্ঠী দেশকে দুঃশাসন উপহার দিয়েছে। তাদের পুরোটা সময় মানুষ দুঃস্বপ্নে বসবাস করেছে। জেল-জুলুমের স্টিমরোলার জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।  ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কাউকে বিচারের নামে প্রহসন করে আবার কাউকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। আয়নাঘর বানিয়ে গুমের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে দেশে যা ঘটেছে তার সাক্ষী দেশের আপামর জনগণসহ গোটা বিশ্ববাসী। ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি এবং মানবাধিকার সংগঠন ঐ সময়ের সরকারকে স্পষ্টভাবে দায়ী করে জুলাই-আগস্টের ঘটনার একটি রিপোর্ট পেশ করেছে।  জামায়াত আমির বলেন, বর্তমানে আমরা জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে অবস্থান করছি। এই বাঁক সফলভাবে উত্তরণ করতে হবে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনের ঘটনা প্রবাসীসহ দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামী একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। আমরা দ্রুততম সময়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের জরুরি সভা করে দেশের চলমান বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আলোচনায় আমরা বলেছি সংঘাত-সংঘর্ষ এবং কাদা ছোড়াছুড়ি করে জাতিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়া একেবারেই সমীচীন হবে না।  তিনি বলেন, জামায়াতের রাজনীতি দেশ ও জনগণের কল্যাণে। জামায়াত সবসময় জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দলীয় পরিকল্পনা-কর্মসূচি রচনা ও পরিচালনা করে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এই অনিশ্চয়তা উত্তরণে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় ডায়ালগ করার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি সকলের সন্তোষজনক আলোচনার মাধ্যমে জাতির আতঙ্ক ও আশঙ্কা দূর হবে এবং এ সংকটের উত্তরণ ঘটবে ইনশা-আল্লাহ।  ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২০১৪তে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৮তে মধ্যরাতের ভোট এবং ২০২৪-এ ডামি আর আমি’র প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির সঙ্গে চরম তামাশা করা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে হবে যার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।  তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দুটি স্পর্শকাতর বিষয় জাতির সামনে এসেছে। মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনা। এ ব্যাপারে সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং দেশের সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অথবা নির্বাচিত পার্লামেন্টের জন্য রেখে দেওয়া যেতে পারে।  সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের বিষয়। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে তাদের মর্যাদাপূর্ণ অবদান রয়েছে। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা উচিত নয়। জাতির প্রত্যাশা সেনাবাহিনী স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবা করবে এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও সেনাবাহিনী যার যার অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের দিকে নজর দেবে।  তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন তিনি এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করতে চান। এতে আমাদের আস্থা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই।  ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে আমিরে জামায়াত শান্তিকামী বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ দশকের পর দশক ধরে নির্যাতিত এবং নিষ্পেষিত হচ্ছে। গাজা ও ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী যুদ্ধ চলছে। আমরা জাতিসংঘসহ শান্তিকামী ও মানবতাবাদী বিশ্বসম্প্রাদয়কে যুদ্ধবিরতি নয়, স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। সিরিয়াকে সে দেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলতে দেওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।  আরাকান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরাকানের রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে পুনর্বাসিত করতে হবে। এব্যাপারে জাতিসংঘকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজ দলের দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সকল ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সকল ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিতে হবে।  সাংবাদিকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আপনাদের রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। আমাদের প্রত্যাশা আপনাদের ইতিবাচক ভূমিকা সমাজকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আসুন আমরা কালোকে কালো এবং সাদাকে সাদা বলি।  সবশেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে জনপ্রত্যাশার জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের প্রিয় সংগঠন অতীতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে, ভবিষ্যতের জন্যও আমরা প্রস্তুত। আল্লাহতায়ালার বিধানে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এই বিধানের মাধ্যমেই সব ধর্মের মানুষের জীবন-সম্পদ ও ইজ্জতের নিরাপত্তা এবং তাদের নিজ নিজ অধিকার নিশ্চিত করার আমাদের লড়াই-সংগ্রাম, চেষ্টা-প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আসুন আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, দুর্নীতিমুক্ত মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রিয় দেশকে সকল ধরনের ক্ষতি ও ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করুন। অনৈক্য ও বিভাজন তৈরি না করি। দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিই।  কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার ষান্মাসিক অধিবেশনে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরবৃন্দ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার (পুরুষ ও মহিলা) সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

বিচার-সংস্কার-নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে দাবি এনসিপির

বিচার-সংস্কার-নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে দাবি এনসিপির

শুধু নির্বাচন আয়োজন নয়, বরং জুলাই গণহত্যাসহ বিগত আমলের অপরাধের বিচার এবং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের আকাক্সক্ষা পূরণের মাধ্যমেই সরকারকে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিক সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে উপনীত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। শনিবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এসব কথা বলেন নাহিদ। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের সঙ্গে বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন-এই তিনটিরই রোডম্যাপ একসঙ্গে প্রকাশ করা উচিত। তাহলেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এবং জনমনে আস্থা তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, জাতীয় নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের কথা ভেবে সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করব এবং একটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দিকে যাব, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’ গণঅভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, এই তালিকাটি আরও আগে প্রকাশ করা হলে কোনো ধরনের সন্দেহ এবং শঙ্কা তৈরি হতো না এবং এটি নিয়ে কেউ কথা বলারও সুযোগ পেত না।  বিগত আমলে আমলাতন্ত্র, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ হয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে মানবতাবিরোধী কাজ করানোরও অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রত্যাশা করেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এই সময়ে এসে বিচারের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শাস্তি দেবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। গুমের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, সেই সব সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই গ্রেপ্তার হননি বা তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায় না উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, এই বিষয়গুলো সুস্পষ্ট করলে সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরও বেশি জনগণের আস্থার জায়গায় যাবে এবং আমরা সেই আস্থার জায়গাতেই সেনাবাহিনীকে দেখতে চাই। আওয়ামী লীগের আমলের নির্বাচনগুলোকে আদালতের মাধ্যমে বৈধতা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। আওয়ামী আমলের সব নির্বাচনকে ফ্যাসিবাদবিরোধী  রাজনৈতিক দলগুলো অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফলে সেই নির্বাচন নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা না করে আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে নাগরিক দুর্ভোগও দূর হবে।’ নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষতা ও আস্থা হারিয়েছে বলে তারা মনে করেন। নির্বাচন কমিশন যদি সেই আস্থার জায়গা ধরে রাখতে না পারে, তাহলে এই কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে নির্বাচন কমিশনকে আস্থার জায়গায় ফিরে আসার চেষ্টা করতে হবে অথবা দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে বলে তিনি মনে করেন। অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে থাকা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে আছেন। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। তারা রাজনীতি বা নির্বাচন করতে চাইলে সরকারে থেকে তা পারবে না; সরকার থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত করে অপপ্রচার ও হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

দশদিন ধরে অবরুদ্ধ নগর ভবন, ঢুকতে পারছে না সেবা প্রার্থীরা

দশদিন ধরে অবরুদ্ধ নগর ভবন, ঢুকতে পারছে না সেবা প্রার্থীরা

তালা খোলেনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয়ের। টানা দশদিন ডিএসসিসির নগর ভবন তালা বন্ধ। ভবনের সব কয়টা ফটকে তালা ঝুলছে। সেবা প্রার্থীরা নগর ভবনে প্রবেশ করতে পারেনি।   শনিবারও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবন অবরোধ করে তার সমর্থকরা। শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এ কারণে সেবা প্রার্থীরা সিটি করপোরেশনে এসে ফিরত যেতে দেখা গেছে। ডিএসসিসির কর্মকর্তারা জানান, শনিবার ডিএসসিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবনে গিয়ে ফেরত গেছেন। ভবনের সব কয়টা ফটকে তালা ঝুলছে। কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আর করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই নগর ভবনের নিচ তলার জরুরি পরিচালনা কেন্দ্রের কক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের সচিবসহ অনেকেই এ কক্ষে জরুরি ফাইলপত্র সই করছেন। এ বিষয়ে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রাসেল রহমান সাংবাদিকদের জানান, গত কয়েক দিনের মতো আজও নগর ভবন তালাবদ্ধ। এতে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে শনিবার সকাল থেকে নগর ভবন অবরোধ করে তার সমর্থকরা। গত বৃহস্পতিবার ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট মামলা খারিজ করে দেওয়ার পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কি উদ্যোগ নেয় তা পর্যবেক্ষণের জন্য ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়ে সেদিন আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিলেন ইশরাক। সে সময় শেষ হওয়ার পর ইশরাকের সমর্থকরা শনিবার আবার নগর ভবনে অবস্থান নেন। তবে নাগরিকদের সেবায় বিঘœ না ঘটাতে আন্দোলনকারীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে ইশরাক হোসেন সরকারকে দ্রুততম সময়ে শপথ আয়োজনের আহ্বান জানান। মোবাইলফোনে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে ইশরাক বলেন, আমরা যেহেতু সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম, মাঝখানে শুক্রবার থাকায় সেদিন কোনো কাজ হয়নি। আমরা শনিবার আরেকদিন সময় দেব, এর মধ্যে যার যার কাজ যেটা আছে, সেটা যেন সম্পন্ন করেন। সরকারের গাফলতির কারণে নগরবাসীর যাতে কোনো কষ্ট না হয়। এটা আমি আশা রাখি। আমার সঙ্গে যখন অন্যয় শুরু করল এই সরকার, তখন সিটি করপোরেশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমরা একে অন্যের পাশে দাঁড়ালে কোনো অপশক্তি আমাদের গ্রাস করতে পারবে না। আপনারা যে কারণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান পাব। এ সময় নগর ভবনে উপস্থিত হয়ে ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের সংগঠন ঢাকাবাসীর সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, এখনো জনতার মেয়র ইশরাক হোসেনের শপথের প্রক্রিয়া শুরু করেনি সরকার। ফলে আজও নগর ভবনে ঢাকাবাসী আন্দোলন করছেন। আজকের মধ্যে সরকার শপথের প্রক্রিয়া শুরু না করলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সরকারের অনেকেই জুলাইয়ের চেতনা ধারণা করছেন না। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেমকে দেশত্যাগে দুর্নীতি দমন কমিশন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এপিএস তার বসের নির্দেশনা ছাড়া দুর্নীতি করতে পারেন না। হয়তো একদিন দেখা যাবে তার বসকেও (উপদেষ্টা আসিফ) দুদক নিষেধাজ্ঞা দেবে।

কান চলচ্চিত্র ইতিহাসে প্রথম পুরস্কার পেল বাংলাদেশ

কান চলচ্চিত্র ইতিহাসে প্রথম পুরস্কার পেল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নির্মাতা আদনান আল রাজীব পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আলী’ ইতিহাস সৃষ্টি করল। বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র আসর কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে এটি পেয়েছে স্পেশাল মেনশন পুরস্কার। এর ফলে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেল। বৃহস্পতিবার  উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে দেখানো হয় সিনেমাটি। তখনই এটি প্রশংসিত হয়। আর শনিবার উৎসবের সমাপনী দিনে পুরস্কারের ফর্দে উঠে এলো ‘আলী’। এতে স্বনামে অভিনয় করেছেন আল-আমিন। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্র আলী উপকূল অঞ্চলের এক কিশোর, যে বেড়ে উঠেছে সমাজের এক কঠোর প্রথার ভেতর। যেখানে নারীদের গান গাওয়াকে অপমান হিসেবে দেখা হয়, সেখানে আলী নিজেই অংশ নিতে চায় একটি গানের প্রতিযোগিতায়। এই সরল আকাক্সক্ষার আড়ালে আছে এক দীর্ঘ সাংস্কৃতিক নিষেধাজ্ঞা, যা প্রশ্ন তোলে লিঙ্গবৈষম্য, পরম্পরা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার সীমারেখা নিয়ে।

পুঁজিবাজারকে ক্যাসিনো বানানো হয়েছে

পুঁজিবাজারকে ক্যাসিনো বানানো হয়েছে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেটকে ক্যাসিনো বানানো হয়েছে। এটাকে ক্যাপিটাল মার্কেট বানানো হয়নি। তবে বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই বাজারকে ধারণ করবে এবং অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করবে। শনিবার ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার : দর্শন ও অনুশীলন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।  আর প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য মো. মোবারক হোসাইন, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) যুগ্ন আহ্বায়ক ড. তাজনুভা জাবিন, আইসিএমএবির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আমীর খসরু বলেন, গত ১৫ বছরে ক্যাপিটাল মার্কেটকে লুটপাট করতে করতে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে ফ্লোর প্রাইস দিতে হয়েছে। লুটপাট করার মতো আর জায়গা রাখা হয়নি। লুট করে খালি করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিনিয়োগকারীরা লোকসানেও শেয়ার বিক্রি করতে পারে না। তিনি বলেন, বিগত কোনো সরকার ক্যাপিটাল মার্কেটকে ধারণ করেনি। দুর্ভাগ্যবশত শেয়ারবাজারও উন্নত হয়নি। এটাকে সব সময় অর্থনীতির বাইরের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। অথচ অর্থনীতির উন্নয়নে ক্যাপিটাল মার্কেটের ভূমিকার বিকল্প নেই। ক্যাপিটাল মার্কেট অর্থনীতির প্রাণশক্তি। তাই আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে ক্যাপিটাল মার্কেটকে ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়, আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন আমি বলব, এক নম্বর হলো বিনিয়োগ, দুই নম্বর হলো বিনিয়োগ এবং তিন নম্বরও হলো বিনিয়োগ। এর বাইরে কিছু নেই। এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের বিনিয়োগে ফোকাস করতে হবে। বিনিয়োগ না হলে কি ভাবে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশের সরকার ও বেসরকারি বিনিয়োগের অর্থের উৎস হতে হবে ক্যাপিটাল মার্কেট। ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে সরকারের ঋণ। ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে প্রাইভেট সেক্টরের ঋণ, দুটিই সম্ভব। আমাদের দেশে সরকারের ঋণের জন্য আইএমএফের পিছে ঘুরছি।  আমরা ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আইএমএফের পিছেপিছে ঘুরছি, এটা দেশের জন্য ৪ বিলিয়ন ডলার কোনো টাকা নয়। কিন্তু আমরা ৪ বিলিয়ন ডলারের জন্য আইএফএম, বিশ্ব ব্যাংকের কাছে যাচ্ছি।  আমীর খসরু বলেন, বিশ্বে বছরে ক্যাপিটাল মার্কেটে ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার এলোকেশন হয়। সর্ভিন ফান্ড (সর্বভৌম তহবিল), ইন্স্যুরেন্স, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে থেকে এই অর্থ আসে। এর মধ্যে ভিয়েতনামেই ৩০০ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশের সংখ্যাটা আমি না বললেই ভালো। ৩০০ বিলিয়ন না, বাংলাদেশে ১০০-২০০ বিলিয়ন ডলার আনতে পারলেই বাংলাদেশের বিনিয়োগের চিত্রটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, একটা গ্রুপ ক্যাসিনোর মালিক। আপনি ক্যাসিনোতে ঢুকবেন, খেলবেন। কিন্তু দিনের শেষে প্রফিট ক্যাসিনো মালিকের। কেউ হারবে, কেউ জিতবে। দিন শেষে সব মুনাফা ক্যাসিনো মালিকের কাছে যাবে। আপনি তো ক্যাপিটাল মার্কেটে সেটা করতে পারছেন। বাংলাদেশে এটা বিশেষ করে ঘটেছে গত ১৫ বছরে। তিনি বলেন, আমরাই (বিএনপি) বাংলাদেশে প্রথম বিদেশি বিনিয়োগ এলাও করেছি। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে যত সংস্কার হয়েছে, তা বিএনপির আমলেই হয়েছে। আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে ফরেন ইনভেস্টর প্রটেকশন আইন বিএনপির সময়ে পাস করা হয়েছে। তারপরেই বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসা শুরু হয়েছে। তারপর বাংলাদেশে এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন হয়েছে। ক্যাপিটাল মার্কেটে যে বিনিয়োগগুলো এসেছে, তার বেশিরভাগ বিএনপির সময়ে এসেছে। তিনি বলেন, আমার পরিচিত অনেকেই এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগে আসতে চায়। তারা একটি ফ্রি ফেয়ার ইলেকশনের অপেক্ষায় আছেন। নির্বাচন হওয়ার পর তারা আসতে চায়, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অনেকে ১০ বিলিয়ন ডলার ফান্ড ম্যানেজ করেছে, অনেকে ২০ বিলিয়ন ডলার ফান্ড ম্যানেজ করেছে।

দুই মাস পর টিসিবির ট্রাকসেল, বেড়েছে দাম কমেছে ভিড়

দুই মাস পর টিসিবির ট্রাকসেল, বেড়েছে দাম কমেছে ভিড়

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রায় দুই মাস পর ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। জানা গেছে, আগের তুলনায় টিসিবির পণ্যের দাম বেড়েছে এবং একইসঙ্গে কমেছে ট্রাকের পেছনে মানুষের ভিড়।  টিসিবির এই ভ্রাম্যমাণ ‘ট্রাকসেল’-এর আওতায় সাশ্রয়ী মূল্যে ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে। তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৩৫ টাকা, চিনির দাম কেজিপ্রতি ৮৫ টাকা ও ডাল কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। এই তিন পণ্যের খুচরা বাজারমূল্য যথাক্রমে লিটারপ্রতি ১৯০ টাকা, কেজিপ্রতি ১২০ টাকা ও কেজিপ্রতি ১১৫-১২০ টাকা।   একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার তেল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি ডাল কিনতে পারবেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরান ঢাকার সুরিটোলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সেখানে ট্রাকসেলের দায়িত্বে থাকা হাজী মুক্তার এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো. সেন্টু মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, দুপুর ১২টা ২০ মিনিট থেকে তারা বিক্রি শুরু করেছেন। মোট ৪০০ জনকে তাদের ট্রাক থেকে পণ্য দেওয়া যাবে বলে জানান তিনি। টিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজধানীসহ সারাদেশে এ রকম ৬৯০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি হবে ৩ জুন পর্যন্ত।  সেন্টু আরও জানান, সবশেষ ঈদুল ফিতরের আগে ২৭ মার্চ ট্রাকসেল করা হয়েছে টিসিবির পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, ‘আগের মতো উপচে পড়া ভিড় নেই। রোজার সময় পণ্য পেতে চার-পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এখন দেড়-দুই ঘণ্টার মতো লাগছে।’ দীর্ঘক্ষণ লাইনে অপেক্ষা করে পণ্য নেওয়ার আগ মুহূর্তে সুরিটোলার বাসিন্দা শাহীদা আক্তার জানান, দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর লাইনের সামনে এসেছেন তিনি।

তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ মূল্যবৃদ্ধিতে কমবে মৃত্যু, বাড়বে রাজস্ব

তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ মূল্যবৃদ্ধিতে কমবে মৃত্যু, বাড়বে রাজস্ব

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে বাজেটে তামাকের ওপর কার্যকর কর ও মূল্যবৃদ্ধি করলে তামাকজনিত মৃত্যুর হার কমবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় আরও বাড়বে বলেও মনে করেন তারা। শনিবার ঢাকা আহছানিয়া মিশনের অডিটরিয়ামে ‘আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাক কর প্রস্তাবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন তথ্য জানান তারা। ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সহ-সভাপতি ডা. মোহাম্মদ খলিলউল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান। সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন এবং আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, গ্লোবাল টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক ফেরদৌস মামুন, বাংলা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক এম এম বাদশাহ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান মাহমুদ। আলোচনা সভায় আসন্ন বাজেটের জন্য তামাক কর ও মূল্য কাঠামো প্রস্তাব করা হয়, যা হলো- নি¤œ ও মধ্যম স্তর একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ, উচ্চস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা, প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ। একই সঙ্গে সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং এক শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা।

আমদানিতে শুল্ক ও ট্যারিফ কাঠামোর দক্ষ ব্যবস্থাপনা জরুরি

আমদানিতে শুল্ক ও ট্যারিফ কাঠামোর দক্ষ ব্যবস্থাপনা জরুরি

বর্তমানে বাণিজ্যিক যে অবস্থা তাতে আমদানি পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি শুল্ক ও ট্যারিফ কাঠামোর দক্ষ ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা : এলডিসি পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয়তা এবং চ্যালেঞ্জ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন, আমাদের পলিসি লেভেলে যারা সরকারে আছে তারা আসলে কী ভাবছে ? ব্যবসায় বর্তমানে যে পরিস্থিতি তা আরও আগেই অ্যালার্মিং হওয়া উচিত ছিল। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, শিল্প খাতের মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি নির্ভর আমাদের অর্থনীতিতে দীর্ঘদিনের উচ্চ মূল্যস্ফীতি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পারস্পরিক শুল্কারোপ, রপ্তানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা, রিজার্ভ স্বল্পতা ও আইনশৃঙ্খলার অস্থিরতার কারণে শিল্পের উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যমান বাস্তবতায় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালার পুনর্মূল্যায়নের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমদানি পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি শুল্ক ও ট্যারিফ কাঠামোর দক্ষ ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। সেই সঙ্গে বাজার সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় দেশ ও অঞ্চলসমূহের সঙ্গে মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি সইয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। এছাড়াও শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন ও অনুমেয় মূল্যে জ্বালানি সরবরাহের তাগিদ দেন তাসকীন আহমেদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার কাঠামোগত সংস্কার জরুরি। তবে যে গতিতে বর্তমানে সংস্কার করা হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। সত্যিকার অর্থে শিল্পখাতসহ অন্যান্য সেক্টরে আমাদের কোনো রোডম্যাপ নেই, যা হতাশার। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং সরকারের সংস্থাগুলোর মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, সব বন্দর সমূহ অর্থনীতির হৃৎপি-, তাই এগুলোর ব্যবস্থাপনা সচল রেখে নির্বিঘেœ কার্যক্রম পরিচালনা করা জরুরি। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে এলডিসি উত্তরণ করতেই হবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।  তবে এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের হাইভ্যালু তৈরি পোশাক, ওষুধ এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের ওপর মনোযোগী হতে হবে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই সাবেক পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান, বশির উল্ল্যাহ্, যুগ্ম-আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন ইউসুফ প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ সরকারি-বেসরকারিখাতের স্টেকহোল্ডাররা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।