ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল

আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল

আওয়ামী লীগের বিচার, রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, দলে সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে এনসিপির বৃহত্তর মোহাম্মদপুর জোনের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি মোহাম্মদপুর টাউন হলের শহীদ পার্ক মসজিদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শিয়া মসজিদের সামনে টোকিও স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল চলাকালে অংশগ্রহণকারীরা “দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ” ও “আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম”সহ নানা স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলে। মিছিল শুরুর আগে শহীদ পার্ক মসজিদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ, যেখানে বক্তব্য রাখেন এনসিপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদিন শিশির বলেন, “যে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা আছে, সেখানে ভারতের আরএসএস ও জঙ্গিবাদের দোসর আওয়ামী লীগের জায়গা হবে না। আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠন। বর্তমান সরকার যদি তাদের নিষিদ্ধ না করে পুনর্বাসন করতে চায়, তাহলে এনসিপি সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।”

হামাসে নতুন ৩০ হাজার যোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিলিস্তিন!

হামাসে নতুন ৩০ হাজার যোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিলিস্তিন!

গাজা ও দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটির সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে অন্তত ৩০ হাজার নতুন যোদ্ধাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গাজা, পশ্চিম তীর ও আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা ও দমননীতির জবাবে চলছে এই প্রস্তুতি। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার তথ্যমতে, কাসেম ব্রিগেডের গোপন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে নতুন সদস্যদের ব্যাপক গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণে রকেট হামলা, বিস্ফোরক পুতে রাখা ও গোপন হামলার কৌশল শেখানো হচ্ছে তরুণ যোদ্ধাদের। মূলত ইসরায়েলি হামলার মাত্রা চরমে ওঠায় মানবিক ও অস্ত্র সংকটে পড়েছে হামাস, আর সেই সংকট মোকাবিলায়ই নেওয়া হয়েছে নতুন নিয়োগের সিদ্ধান্ত। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আইডিএফ দাবি করেছে, চলমান যুদ্ধে তারা হামাসের অন্তত ১২ হাজার সদস্যকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, গত দেড় বছরে তাদের প্রায় ৬ হাজার যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছে। গত মার্চে যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভঙ্গের পর হামাস আরও ৩০০ যোদ্ধা নিয়োগের কথাও জানায়। তবে কাসেম ব্রিগেড স্পষ্টভাবে জানায়নি ঠিক কবে, কোথায় এবং কীভাবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবুও, ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধিকার আদায়ে নতুন করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হামাস ও এর সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড। ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/TtTOFA8Vb20?si=GXvlx4ghOGpBJCtp

রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারের। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ধীরে ধীরে বেড়েই চলছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ রয়েছে ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন বা দুই হাজার ৬৭৩ কোটি ডলার। তবে আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি (বিপিএম-৬) অনুযায়ী রিজার্ভ ২১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা দুই হাজার ১৩৯ কোটি ডলার। এ দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে জানানো হয়। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়। সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব। নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের ‘বিপিএম-৬’ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ বের হয়। রিজার্ভের ইতিবাচক ধারায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স। চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে ১০৫ কোটি ২৪ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। গত মার্চ মাসে রেমিটেন্স আহরণে নতুন ইতিহাস রচিত হয়। মার্চে রেমিটেন্স এসেছে তিন দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড। এক মাসে এর চেয়ে বেশি পরিমাণ রেমিটেন্স আগে কখনো আসেনি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিটেন্স এসেছে। পরের মাস আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে। ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার ও মার্চে সব রেকর্ড ভেঙে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা সাত মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে দেশে। যার প্রভাবেই চাঙা রয়েছে রিজার্ভ। বাইরের অর্থ পরিশোধও বেড়েছে ॥ ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে রিজার্ভ ২৫ বিলিয়নে পৌঁছালেও এ সময়ে বৈদেশিক ঋণ ও সুদের অর্থ পরিশোধ কমেনি, বরং বেড়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশী ঋণ পরিশোধ হয়েছে দুই দশমিক ৬৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে মূল ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে এক দশমিক ৯৬২ বিলিয়ন ডলার (৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি) এবং সুদ বাবদ ৯৪৪ মিলিয়ন ডলার (১৭ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি)। একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে চার দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ দশমিক তিন শতাংশ কম। অর্থাৎ, রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে ঋণ পরিশোধ কমার ভূমিকা নেই, বরং চাপ আরও বেড়েছে। তবে ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকটি চীনা এবং বহুপাক্ষিক ঋণের কিস্তি পুনঃসমন্বয়ের উদ্যোগ নেয়, যার ফলে তাৎক্ষণিক বৈদেশিক অর্থপ্রবাহের চাপ কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, সুদ ও ঋণ পরিশোধের একটি অংশ দ্বিতীয় প্রান্তিকে সরিয়ে আনার ফলে রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের কঠোর অবস্থান ও প্রণোদনামূলক পদক্ষেপ ॥ রিজার্ভ ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার পেছনে মূল চালিকাশক্তি ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত হস্তক্ষেপ ও প্রণোদনামূলক পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসী আয় বাড়ানো ও আমদানি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া কার্যকর নীতিগুলোই রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। ড. আহসান এইচ মনসুর গভর্নরের দায়িত্ব নিয়েই রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে কঠোর অবস্থান নেন। হুন্ডি দমনে মোবাইল কোর্টের মতো ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রবাসী আয় দেশে আনতে বাড়ানো হয় প্রণোদনা। বিলাসবহুল পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমদানি ব্যয়ের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয় নজরদারিমূলক ব্যবস্থা। পাশাপাশি ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় আস্থা ফেরাতে চালু করা হয় নিরীক্ষা কার্যক্রম। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘রপ্তানি ও রেমিটেন্স বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এতে ডলারের বাজারে চাপ কমেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সুশৃঙ্খল ডলার ব্যবস্থাপনাও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এখনই বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বাজার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেবে না। রিজার্ভের পরিস্থিতি আরও উন্নতি হলে পুরোপুরি বাজারের দিকে যাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজার। এছাড়া জুন নাগাদ দাতা সংস্থা (আইএমএফ) রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা বাংলাদেশ ব্যাংক পূরণ করতে পারবে বলে আশা করেন তিনি। তা হলেই আইএমএফের দেওয়া ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি এক সঙ্গে পাওয়া যাবে।