কেক প্রথম তৈরি হয়েছিল মিসরীয়দের হাতে। ৩০০০-৫০০০ বছর আগে মিসরীয়রা রুটির সঙ্গে মধু বা মিষ্টি সিরাপ খেত। একসময় রুটিতে মিষ্টি স্বাদের জন্য নানান জিনিস মেশাতে থাকে। সেই সময় গমের আটা, খামির, ডিম, দুধ এবং মসলা দিয়ে কেক তৈরি করা হতো। মধু, ডুমুর বা খেজুর দিয়ে মিষ্টি করা হতো। কেকটি গরম করা হতো পাথরের ওপর রেখে। এখন যে কাজটি করা হয় ওভেনে। গোলাকার এবং মিষ্টি এই কেক ধর্মীয় উৎসব এবং উদযাপনে খাওয়া হতো। দেবতাদের উদ্দেশে বানানো হতো এবং মৃতদের সঙ্গে কবরে দিয়ে দেওয়া হতো মিষ্টি কেক। ইউরোপের অন্যান্য জায়গায় এর অনেক পরে ১৫ শতাব্দীর দিকে কেকের পরিচিতি বাড়তে থাকে।
১৫৭০ সালের দিকে এসে কেক বানানোর আজকের যে প্রক্রিয়া অর্থাৎ ডিমের সাদা অংশ আলাদা করে ফেটিয়ে ফোম বানিয়ে তৈরি করা শুরু হয়। তখন ডিমের ফোম তৈরি করা বেশ কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার ছিল। প্রথম স্পঞ্জ কেক ১৮ শতকের শেষ দিকে ইতালির জেনোয়া অঞ্চলের একজন পেস্ট্রি শেফ উদ্ভাবন করেছিলেন।
রাজার দরবারে ভোজসভার জন্য তিনি এই কেক তৈরি করেছিলেন। স্পঞ্জ কেক তৈরিতে ব্যবহার হতো ডিম, চিনি এবং ময়দা। সামান্য সুগন্ধি ব্যবহার করা হতো ডিমের গন্ধ দূর করার জন্য। তবে কেক ব্যাটার তৈরি করার জন্য ডিমটিকে প্রস্তুত করাই ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ। সেই সঙ্গে চিনি এবং ময়দার পরিমাপও ঠিক রাখতে হতো। নাহলে পার্ফেক্ট স্পঞ্জ কেক তৈরি সম্ভব হবে না।
১৮ এবং ১৯ শতকের মধ্যদিকে ফ্রান্সে কেকের রেসিপিগুলো আরও পরিমার্জিত হয়। ১৭৮০ সালে ওভেন উদ্ভাবিত হয়, যা বেকিংয়ের কাজ আরও সহজ করে তোলে। পূর্বে বাড়ির বাবুর্চিরা রান্নার জন্য যে চুলা ব্যবহার করতেন সেখানে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা হতো ফলে কেক তৈরি করা ছিল চ্যালেঞ্জিং। ১৮৫০ সালে বেকিং পাউডার উদ্ভাবিত হয়। ১৮৮৪ সালের শেষের দিকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন হয়, যেটি ডিম ফোটানোকে আরও সহজ করে তুলেছিল। ওহাইওতে উইলিস জনসন নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান, একটি যান্ত্রিক ডিম বিটার তৈরি করেন। এটি একটি ঘূর্ণমান বিটার, যেটাতে খুব সহজেই ডিম ফেটানো এবং কেকের মিশ্রণ তৈরি করা যায়। সূত্র : দ্য ফ্লাওয়ারিং হার্থ