ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

international standard university
international standard university
সিরিয়ায় আইএস-পিকেকে নির্মূলের এখনই সময়: এরদোয়ান

সিরিয়ায় আইএস-পিকেকে নির্মূলের এখনই সময়: এরদোয়ান

সিরিয়ার ক্ষমতার পালাবদলের এই সময় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি গোষ্ঠী পিকেকে নির্মূলের উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে কায়রো সফরের পর আঙ্কারায় ফেরার পথে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এরদোয়ান জানান, সিরিয়ার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূল করতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ২০১১ সালে সিরিয়ায় জন্ম নেওয়া আইএস দ্রুতই সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাদের এই উত্থান তুরস্কের জন্যও বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আইএসের প্রভাব ঠেকাতে কঠোর লড়াই করতে হয়েছে তুরস্ক সরকারকে। অন্যদিকে, পিকেকে বহু বছর ধরে তুরস্কের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি। কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত এই গোষ্ঠী বেশ কিছু সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী। পিকেকের পাশাপাশি তাদের সহযোগী গোষ্ঠী এসডিএফ এবং ওয়াইপিজিও তুরস্কের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। এরদোয়ান বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুরস্ক এককভাবে কাজ করছে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিলে এই সংকট থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সিরিয়ার বর্তমান সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান এরদোয়ান। তিনি জানান, তুরস্কের শীর্ষ কূটনীতিবিদ হাকান ফিদানকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে দামেস্ক পাঠানো হবে। - এএফপি

পুঁজিবাজারে অস্থিরতার পেছনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও প্লেয়ারদের বড় ভূমিকা

পুঁজিবাজারে অস্থিরতার পেছনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও প্লেয়ারদের বড় ভূমিকা

পুঁজিবাজারে অস্থিরতার পেছনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও প্লেয়ারদের ভূমিকা আছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। বিনিয়োগকারীদের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা বেশি মুনাফার উদ্দেশ্যে জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনছেন, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। আবার শেয়ারের দাম কমে গেলে আন্দোলন করেন। আমি কখনোই এর পক্ষে নই। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্যাংকিং অ্যালমানাকের ৬ষ্ঠ সংস্করণের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। একই অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনীতিতে এ মুহূর্তে পাঁচটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে এখন আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ চলছে এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাও সন্তোষজনক পর্যায়ে। যথাযথ পদক্ষেপ নিলে অন্য তিনটির ক্ষেত্রেও ২০২৫ সালের মধ্যে ইতিবাচক কিছু দেখা যাবে। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার, ব্যাংকিং অ্যালমানাকের বোর্ড অব এডিটরসের সদস্য, অ্যাসোসিয়েশোন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি)- সাবেক চেয়ারম্যান এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন, অ্যালমানাকের এক্সিকিউটিভ এডিটর সৈয়দ জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। দেশের ব্যাংকিং সেবা, বৈচিত্র্যের তথ্য-উপাত্ত জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে ব্যাংকিং অ্যালমানাকের প্রয়োজনীয়তা ও তাৎপর্য বিষয়ে বিশেষ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যালমানাকের প্রকল্প পরিচালক আবদার রহমান। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তথ্য রয়েছে ব্যাংকিং অ্যালমানাকে। এতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য রয়েছে। ব্যাংকের সহযোগিতায় শিক্ষাবিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘শিক্ষাবিচিত্রা’র উদ্যোগে ২০১৬ সাল থেকে এটি প্রকাশিত হচ্ছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল, শাখা, পণ্যের তালিকাসহ সবই আছে এ বইয়ে। এদিকে, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করেন। অনেক সময় না বুঝেই হুজুগে মহা আনন্দে শেয়ার কিনছেন, যার ন্যূনতম  কোনো মূল্য নেই। এগুলো কয়েক দিন পরই ওয়েস্ট পেপার হিসেবে ব্যবহার হবে। তিনি বলেন, আমি বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছি না। পুঁজিবাজারের প্লেয়ার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার (রেগুলেটর) অনেক দোষ আছে। আমি মনে করি এটা প্রচার করা দরকার। সঠিক তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কোনো কিছু মূল্যায়ন হয় না উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বিগত ১৫ বছরের তথ্য বিভ্রাট নিয়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। যেমন পতিত সরকার মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধি নিয়ে তথ্য বিভ্রাট করেছে ইচ্ছাকৃতভাবেই। সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরাকে (বিবিএস) বলা হয়েছে তথ্য যা আছে তাই যেন প্রকাশ হয়। তিনি বলেন, এখানে কারচুপির কোনো ব্যাপার নেই।

প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার শুল্ক ছাড়

প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার শুল্ক ছাড়

দেশে বছরে প্রায় পৌনে তিন লাখ কোটি টাকার শুল্ক-কর ছাড় দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আয়কর যা আদায় হয়, তার চেয়ে বেশি করছাড় দেওয়া হয়। মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও শুল্কের ক্ষেত্রেও করছাড়ের পরিমাণ প্রায় আদায়ের কাছাকাছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তিনটি প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় এনবিআরকে নানা ধরনের শর্ত ও লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। ঋণের শর্ত হিসেবে আইএমএফ করছাড় কমাতে বলেছে। কয়েক দশক ধরে যে কর অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে, তা বাতিলের জন্য সংস্থাটি আবারও চাপ দিয়েছে। তারা বলেছে, বিদ্যমান সব ধরনের করছাড় ২০২৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে তিন ধাপে বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া আয়কর আইনের ৭৬(১) ধারা বাতিলের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে করছাড় দেওয়ার স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা বাতিলের শর্ত মানতে বলেছে। এনবিআর নিজেও এখন অবশ্য করছাড় ধীরে ধীরে উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে। তারা আইএমএফের শর্ত আরোপের পর করছাড় বিষয়ে তিনটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এ নিয়ে এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পরিচালক স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, এরই মধ্যে এনবিআর আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কসংক্রান্ত কর অব্যাহতির বিষয়ে বিস্তারিত সমীক্ষা করেছে। এখন আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে, কোন খাতে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন এবং কোন খাত ইতোমধ্যে যথেষ্ট সমর্থন পেয়েছে। সহায়তা পাওয়া খাতগুলোর ওপর থেকে ধীরে ধীরে সমর্থন প্রত্যাহার করতে হবে। এদিকে আইএমএফের শর্ত পালনে এনবিআর ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত শুল্ক-কর ছাড়ের বিষয়ে তিনটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায় আয়কর, ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও আবগারি শুল্ক মিলিয়ে এক অর্থবছরে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪১০ কোটি টাকার ছাড় দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি করছাড় দেওয়া হয় ভ্যাট খাতে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৭০ কোটি টাকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়, যা ওই বছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। সেই অর্থবছরে এই খাতে এনবিআর আদায় করেছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সেবার যত ভ্যাট আদায় হয়েছে, তার প্রায় ৮২ শতাংশের মতো ছাড় দেওয়া হয়েছে। ছাড় না দিলে ভ্যাট খাতে এই অর্থবছরে আদায় হতো ২ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। মূলত অব্যাহতি কিংবা শুল্ক-করের হার কমিয়ে ব্যবসায়ীদের এ ধরনের ছাড় দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যাট অবকাশ বন্ধ করা ও সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করাসহ নিয়ম-নীতি পরিপালন করা গেলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করা যেত, কিন্তু সেবার আদায় হয়েছে ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ভ্যাট গ্যাপ বা সম্ভাবনা ও আদায়ের মধ্যে ঘাটতি ছিল প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা। আয়কর খাতে আদায়ের চেয়ে ছাড়ের পরিমাণ বেশি।