ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাজনীতি
শেখ হাসিনার মধু খেয়ে রাজনীতি করেছি কিনা তার জবাব জনগণই দিবে: ইশরাক

শেখ হাসিনার মধু খেয়ে রাজনীতি করেছি কিনা তার জবাব জনগণই দিবে: ইশরাক

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেছেন, বর্তমান সরকার প্রশাসনের একটি অংশকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, "সরকারের ভেতরে আরেকটি সরকার রয়েছে, যারা দলীয় আচরণ করছে এবং একটি নির্দিষ্ট দলকে সুবিধা দিচ্ছে।" শনিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্তের পক্ষে আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং গেজেট প্রকাশ করেছে। তারপরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আবারও চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি নিয়ে কালক্ষেপণ করছে। তিনি অভিযোগ করেন, কেউ বলছে এটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, কেউ বলছে সলিসিটর অফিসে, যা স্পষ্ট করে দেয় যে প্রশাসনের একটি অংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে। তিনি আরও বলেন, “এনসিপি একটি বিবৃতিতে বিচারকদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা অতীতে আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গিতেও দেখেছি, যেখানে রায় নিজেদের পক্ষে না গেলে তারা বিচারকদের হুমকি দিত এবং চাপ প্রয়োগ করত। এমন আলামত আমাদের কাছে রয়েছে এবং আমরা পরবর্তীতে তা প্রকাশ করব।” নিজেকে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী দাবি করে ইশরাক বলেন, “আমি কি শেখ হাসিনার পক্ষের কেউ ছিলাম? আমি তো বরং তার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করেছি। তাহলে কেন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? কারণ একটাই—আমি বিএনপির প্রার্থী, ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী। সরকার তাদের দলীয় লোকদের প্রশাসক হিসেবে বসিয়ে নির্বাচনের সময় সুবিধা নিতে চায়।” তিনি দাবি করেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কেন্দ্রিক বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও লুটপাটকে অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই তাকে বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ আন্দোলন ব্যক্তিগতভাবে তিনি শুরু করেননি বলেও উল্লেখ করেন। ইশরাক বলেন, “এটি ঢাকা দক্ষিণের জনগণ এবং ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত সিদ্ধান্ত। আমি তাদের কাছ থেকে জেনেছি, আন্দোলন চলমান থাকবে যতক্ষণ না দাবি পূরণ হয়। কর্পোরেশনের কর্মকর্তারাও এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন।” তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার মধু খেয়ে আমি রাজনীতি করেছি কিনা, তার জবাব জনগণ জানে এবং তারা সরকারকে প্রয়োজন অনুযায়ী সেই জবাব দেবে।” ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=mlFQgQC2gBE

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণে কাজ করবে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ : তথ্য সচিব

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণে কাজ করবে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ : তথ্য সচিব

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণে কাজ করবে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। আজ আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সচিব বলেন, ঐতিহ্যবাহী ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসাবে ‘বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ’ ভিজ্যুয়াল বা চিত্রভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণের গৌরবময় দায়িত্ব পালন করছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

adbilive
adbilive
শেখ হাসিনার মধু খেয়ে রাজনীতি করেছি কিনা তার জবাব জনগণই দিবে: ইশরাক

শেখ হাসিনার মধু খেয়ে রাজনীতি করেছি কিনা তার জবাব জনগণই দিবে: ইশরাক

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেছেন, বর্তমান সরকার প্রশাসনের একটি অংশকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, "সরকারের ভেতরে আরেকটি সরকার রয়েছে, যারা দলীয় আচরণ করছে এবং একটি নির্দিষ্ট দলকে সুবিধা দিচ্ছে।" শনিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্তের পক্ষে আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং গেজেট প্রকাশ করেছে। তারপরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আবারও চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি নিয়ে কালক্ষেপণ করছে। তিনি অভিযোগ করেন, কেউ বলছে এটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, কেউ বলছে সলিসিটর অফিসে, যা স্পষ্ট করে দেয় যে প্রশাসনের একটি অংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে। তিনি আরও বলেন, “এনসিপি একটি বিবৃতিতে বিচারকদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা অতীতে আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গিতেও দেখেছি, যেখানে রায় নিজেদের পক্ষে না গেলে তারা বিচারকদের হুমকি দিত এবং চাপ প্রয়োগ করত। এমন আলামত আমাদের কাছে রয়েছে এবং আমরা পরবর্তীতে তা প্রকাশ করব।” নিজেকে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী দাবি করে ইশরাক বলেন, “আমি কি শেখ হাসিনার পক্ষের কেউ ছিলাম? আমি তো বরং তার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করেছি। তাহলে কেন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? কারণ একটাই—আমি বিএনপির প্রার্থী, ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী। সরকার তাদের দলীয় লোকদের প্রশাসক হিসেবে বসিয়ে নির্বাচনের সময় সুবিধা নিতে চায়।” তিনি দাবি করেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কেন্দ্রিক বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও লুটপাটকে অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই তাকে বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ আন্দোলন ব্যক্তিগতভাবে তিনি শুরু করেননি বলেও উল্লেখ করেন। ইশরাক বলেন, “এটি ঢাকা দক্ষিণের জনগণ এবং ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত সিদ্ধান্ত। আমি তাদের কাছ থেকে জেনেছি, আন্দোলন চলমান থাকবে যতক্ষণ না দাবি পূরণ হয়। কর্পোরেশনের কর্মকর্তারাও এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন।” তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার মধু খেয়ে আমি রাজনীতি করেছি কিনা, তার জবাব জনগণ জানে এবং তারা সরকারকে প্রয়োজন অনুযায়ী সেই জবাব দেবে।” ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=mlFQgQC2gBE

৫ আগস্টের পরে আমরা আবারও সাংস্কৃতিক যুদ্ধে জড়িয়ে গেছি: হাসনাত

৫ আগস্টের পরে আমরা আবারও সাংস্কৃতিক যুদ্ধে জড়িয়ে গেছি: হাসনাত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ আবারও এক সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্ট একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। আদর্শিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের পথে এগিয়ে যাব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা এখন আবারও এক পশ্চাৎমুখী সাংস্কৃতিক সংঘাতের মধ্যে ঢুকে পড়েছি।” হাসনাত আরও বলেন, “আমরা একটি প্রগতিশীল ধারা তৈরি করতে পারছিলাম, কিন্তু হঠাৎ করেই সেই ধারা থেকে আমরা সরে এসে আবার পিছনের দিকে হাঁটছি। এই নতুন সাংস্কৃতিক সংঘাতে সবচেয়ে ভয়াবহ যে দিকটি প্রকাশ পাচ্ছে, তা হলো—মুসলমান পরিচয়কে ঘিরে একটি হীনমন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন এমন একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে যে, আপনি যদি মুসলমান হন, তাহলে অসাম্প্রদায়িক হওয়া আপনার জন্য কঠিন। অথচ অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় বজায় রেখেই অসাম্প্রদায়িক হতে পারছেন।” তিনি অভিযোগ করেন, “এই সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বটি আমাদের সমাজে একটি বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে—আপনি হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান হয়ে অসাম্প্রদায়িক হতে পারবেন, কিন্তু মুসলমান পরিচয় নিয়ে তা সম্ভব নয়। এটি একটি স্পষ্ট সাংস্কৃতিক বৈষম্য, যা একটি দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকত্ববোধ সৃষ্টি করছে।” হাসনাত আবদুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “এই ধরনের সাংস্কৃতিক সংঘাতের ভেতর দিয়েই ফ্যাসিবাদের বীজ গোপনে বপন করা হয়। যত বেশি মানুষকে এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে রাখা হবে, তত সহজে বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ও আধিপত্য বিস্তার সম্ভব হবে। এর ফলে আমরা শুধু সাংস্কৃতিকভাবে নয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে ও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ব।” তিনি সাংস্কৃতিক সহনশীলতা ও সমতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “একটি সত্যিকার অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের জন্য আমাদের সব ধর্মের মানুষের পরিচয়কে সম্মান করতে হবে এবং ধর্মীয় পরিচয়কে হীনমন্যতার কারণ না বানিয়ে তাকে ইতিবাচক বৈচিত্র্য হিসেবে দেখতে শিখতে হবে।” ভিডিও দেখুন: https://www.facebook.com/share/v/1JsCGRRs3V/

আসছে গতি ফেরানোর বাজেট

আসছে গতি ফেরানোর বাজেট

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের এটিই প্রথম বাজেট। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রায় দেড়যুগ শাসনের অবসানের পর এবার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী একটি ‘কল্যাণমুখী’ বাজেট প্রণয়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যে বাজেটে সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য কমিয়ে এনে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে চায় বর্তমান সরকার। বিশেষ করে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিতে গতি ফেরানোর লক্ষ্যে সব ধরনের পদক্ষেপ থাকবে নতুন বাজেটে। এ লক্ষ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা, নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান তৈরি, গ্রামীণ অবকাঠামো পুনর্গঠন, সামাজিক নিরাপত্তায় জোরদার, ধীরে ধীরে ঋণ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসা এবং অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প গ্রহণ না করার মতো কর্মসূচিতে জোর দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ জুন আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অর্থনীতিতে গতি ফেরানোর লক্ষ্য নিয়েই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানিতে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলো মোকাবিলায় একটি গাইড লাইন থাকবে নতুন বাজেটে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে স্থায়ী কমিশন গঠন করার ঘোষণা আসতে পারে। এ ছাড়া রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপ, এলডিসি গ্রাজুয়েশন, জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনে প্রকল্প গ্রহণ, বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও নিজদেশের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান ঠিক রাখা, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের গতি বেগবান করতে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠা, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্যবিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কারের বিষয়গুলোতে নজর দেবে সরকার। সার্বিকভাবে আর্থ-সামাজিকভাবে বৈষম্য কমানোর যে তাড়না থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূত্রপাত হয়েছিল, তা পূরণে সব ধরনের উদ্যোগ থাকবে বাজেটে। বাজেট সামনে রেখে জুন মাসের মধ্যেই উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ দিচ্ছে ১৩০ কোটি ডলার। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে।  বিপুল পরিমাণ এই অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হলে ডলার সংকট দূর হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করতে পারবে সরকার। এ ছাড়া সরকারের আয় বাড়াতে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি আলাদা বিভাগ করা হয়েছে। এর ফলে সরকারের আয়কর ও ভ্যাট ও শুল্ক আদায় বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা তৈরি হয়েছিল তা কেটে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ধীরে ধীরে বর্তমান সরকার দেশি-বিদেশি ঋণ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে এত বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে যে, সেই ঋণের আসল এবং সুদের অর্থ পরিশোধ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। এ কারণে ঋণ করে আর কোন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করবে না অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ইতোমধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিদেশ থেকে ধার করে টাকা এনে তা দিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নীতি নেওয়া হবে না। নতুন অর্থবছরের বাজেটে অত্যন্ত বাস্তব ভিত্তিক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করব না। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার বাজেটটা বাস্তবায়ন করবে, এজন্য বিরাট একটা গ্যাপ নিয়ে বাজেট তৈরি করা হচ্ছে না। প্রকল্প, এডিপি বাস্তবায়ন করব অত্যন্ত বাস্তব ভিত্তিতে। এর পরও কিছুটা তো ডেফিসিট (ঘাটতি) থাকবে। সেটা পূরণ করতে নেগোশিয়েট (আলোচনা) করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে প্রজেক্টের ব্যাপারে কথা বলছি, সেটা মোটামুটি এখন সাকসেসফুল হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে আজ বাজেট উপস্থাপন ॥ অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নতুন অর্থবছরের বাজেট চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সামনে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টা শেষ পর্যন্ত বড় কোনো পরিবর্তন, সংযোজন বা বিয়োজনের নির্দেশনা না দিলে উপস্থাপিত প্রস্তাবিত বাজেটই শেষ পর্যন্ত জাতির সামনে তুলে ধরবেন উপদেষ্টা। তবে ২ জুন বাজেট পেশের আগে আরেক দফা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ওই সময় সামান্য কিছু পরিবর্তন বা সংযোজন বিয়োজন হতে পারে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা খাত এবার ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কি ধরনের অনিয়ম, অর্থের অপচয় এবং সুবিধাভোগীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এক্ষেত্রে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে সুবিধাভোগীদের তালিকা নতুন করে প্রণয়ন করা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তাসহ এ খাতে অন্তর্ভুক্ত  করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এ খাত থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বেশকিছু প্রকল্প বাদ যাবে। তবে আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের চলমান আটটি কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মা ও শিশু, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, বেদে এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ভাতার পরিমাণ ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। করমুক্ত আয়সীমা বাড়বে ॥ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রায় দুইবছর পর এবার করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি সমর্থন করে সংগঠনটির প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান সম্প্রতি এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা সভায় করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করেন। জানা গেছে, বিভিন্ন মহলের দাবির প্রেক্ষিতে এবার করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হচ্ছে।  এ ছাড়া আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে করপোরেট করের শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। শর্ত শিথিল হলেও করপোরেট করের হার কমানো হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের  বেশিরভাগ অর্থনীতি এখনো ব্যাংকের লেনদেনের বাইরে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ব্যাংকনির্ভর নয়। বড় এবং মাঝারি কোম্পানির ক্ষেত্রে লেনদেনের শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয় না।  সেজন্য তারা কর কমানোর সুবিধা নিতে পারছেন না। তাদের ভাষ্য, কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের আয় বা প্রাপ্তি এবং ব্যয় ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক লেনদেনের সীমারেখা নির্ধারণ করে দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানের অনেক ব্যয়কে করের আওতায় ধরা হয়। বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির  ক্ষেত্রে কর ২০ শতাংশ হলেও ক্ষেত্র বিশেষে বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয়। এ প্রসঙ্গে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য করপোরেট কর কমানো হলেও কঠিন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে ব্যবসায়ীদের কোনো লাভ হয়নি। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লেনদেন এখনও ব্যাংকের বাইরে। যেমন একটি কারখানায় ১ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী আছে। তাদের  বেতন ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের টিএ, ডিএ বা তাদের পেছনে অন্য যেসব খরচ হয়, সেগুলো নগদে সম্পন্ন হয়। ফলে বড় আকারের এসব লেনদেন ব্যাংকের আওতার বাইরে থেকে যায়। এছাড়া সর্বনিম্ন চাঁদার হার আরও কমিয়ে আনার নতুন বিধান যুক্ত করে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পেনশনযোগ্য বয়স হলে জমাকৃত অর্থ এককালীন তোলার সুযোগ, প্রবাস ও প্রগতি স্কিমে সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার পরিমাণ কমানো, প্রগতি স্কিমে মাসিক সর্বোচ্চ জমার পরিমাণ বাড়ানো, আউটসোর্সিং সেবা চুক্তিতে নিয়োজিত কর্মীদের পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা ও সর্বজনীন  পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর প্রাথমিক উদ্যোগ নেওয়া ইত্যাদি। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যাবে। আগামী অর্থবছর থেকে এসব সুবিধা কার্যকর করবে সরকার। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে হচ্ছে স্থায়ী কমিশন ॥ বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ রোজার ঈদে বাজারে স্বস্তি ছিল সাধারণ মানুষের। এখন চালের দাম কমে আসায় বাজারে স্বস্তি ফিরে আসছে। সারাবছরই যাতে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেজন্য স্থায়ী কমিশন গঠনের ঘোষণা বাজেটে দেওয়া হতে পারে। নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফেরাতে সিন্ডেকটমুক্ত করার দাবি দীর্ঘদিনের। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি চাল, ডাল, ডিম, ভোজ্যতেল, চিনি ইত্যাদি নিত্যপণ্যে সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য নতুন একটি স্থায়ী কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ কমিশনের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে ভোক্তাদের সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। এ  প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সম্প্রতি বলেন, আমরা নতুন কমিশন গঠনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মতামত পাওয়ার পর সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হবে। এর পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের এ ধরনের প্রস্তাবে সরকার যদি সম্মতি দিয়ে থাকে তাহলে এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় ক্যাব। তিনি আরও বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে অবশ্যই সংস্কার হতে হবে। তবে শুধু একটি কমিশন করে দিলেই হবে না,  এ সম্পর্কিত আরও যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোকে কার্যকরী করতে হবে।   বাজেটের আকার কমিয়ে বাস্তবসম্মত করা হয়েছে ॥ অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে সস্তা বাহবা নিতে বিগত দিনগুলোতে বাজেট ফুঁলিয়ে ফাঁপিয়ে করা হয়েছে। তবে এবার আকার কিছুটা কমিয়ে বাস্তবসম্মত করা হয়েছে। বাজেট শতভাগ বাস্তবায়নের আশা করা করছে বর্তমান সরকার। এ কারণে বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে  রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গতবারের চেয়ে ছোট বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে অর্থ মন্ত্রণারয়। ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের আকার ঠিক করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। নতুন বাজেটের আকার কমলেও পরিচালন বা অনুন্নয়ন খাতে বরাদ্দের প্রাক্কলন করা হচ্ছে ৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। তবে উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) চলতি অর্থবছরের ব্যয়ের পরিকল্পনা ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী বাজেটে যা ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকুচিত মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি ব্যয় কমানো এবং বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য করতেই আকার কমানো হচ্ছে।

চাল পেঁয়াজ মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে ডিম ও ভোজ্যতেলের

চাল পেঁয়াজ মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে ডিম ও ভোজ্যতেলের

নিত্যপণ্যের বাজারে চাল, পেঁয়াজ, মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে ডিম ও ভোজ্যতেলের দাম। ডাল, চিনি ও আটার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কিছুটা বেড়েছে মসলাপাতির দাম। এছাড়া আলু, শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মৌসুমি ফল আম, লিচুু, তালের শাঁসে ভরে উঠছে বাজার। ফলের দাম কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুলবাজার, কাপ্তানবাজার, মুগদা বড়বাজার, খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কাঁচাবাজার ও গোড়ান কাঁচাবাজার থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির তথ্যমতে, নতুন ধান ওঠায় সব ধরনের চালের দাম কমতে শুরু করেছে। প্রতিকেজি সরু নাজিরশাইল ও মিনিকেট চালে ৫ টাকা কমে ৭০-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি প্রতিকেজি ৫২-৫৫ এবং মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম কিছুটা কমে  ৫৮-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। কেজিতে ৫ টাকা কমে প্রতিকেজি পেঁয়াজ মানভেদে ৪৮-৬০ ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমে প্রতিকেজি ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিমের দাম বেড়ে ডজন ১৪০-১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম বেড়ে প্রতি পাঁচ লিটার সয়াবিনের ক্যান ৯১০-৯২০ এবং প্রতিলিটার পামওয়েল ১৪৮-১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে মসলাপাতির দাম। চালের দাম কমার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নতুন ধান ওঠায় চালের দাম কমতে শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে কাপ্তান বাজারের চাল ব্যবসায়ী নূর রাইছ এজেন্সিী স্বত্বাধিকারী নূরমিয়া জানান, সরবরাহ বাড়লে সামনের দিকে আরও কমবে চালের দাম। এজন্য মিল থেকে পাইকারি বাজারে চালের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকার চালের বড় বাজার বাদামতলীর পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা জানিয়েছেন, নতুন ধানের চাল বাজারে এসেছে। এ কারণে দাম এখন পড়তির দিকে। মিলগেটে উৎপাদন  বাড়ানো হলে চালের দাম আরও কমতে পারে। বাজারে এখন গ্রীষ্মের  পোটল-ঢ্যাঁড়শের মতো সবজিগুলো অন্য সময়ের তুলনায় কিছুটা  কম দামে কেনা যাচ্ছে। এসব সবজি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০-৬০ টাকায়। এছাড়া চিচিঙ্গা, ঝিঙে, কাঁকরোল, উস্তা, বেগুন ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। গোড়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা বশির জানান, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে, দামও কমছে। তবে বাজার এখনো ওঠানামা করছে। এছাড়া বাজারে প্রচুর পরিমাণে মৌসুমি ফল, আম ও লিচু পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতারা ফলের কেনাকাটা বাড়িয়েছেন। বিশেষ করে আম ও লিচু কিনতে ক্রেতার ভিড় দেখা যাচ্ছে ঢাকার ফলের দোকানগুলোতে।