ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

জাতীয়
শ্রমবাজার ২৫টি থেকে নেমে এসেছে ১৬টিতে

শ্রমবাজার ২৫টি থেকে নেমে এসেছে ১৬টিতে

ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে বাংলাদেশের শ্রম বাজার। বর্তমান বৈশ্বিক যুগে যেখানে দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ার কথা, সেখানে দেশের এই শ্রমবাজার ফিকে হয়ে আসছে। শুধু দুই বছরেই অন্তত দশটি শ্রম বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। ২৫টি থেকে এই শ্রমবাজারের সংখ্যা নেমে এসেছে ১৬টিতে। এ বছর বন্ধের আশঙ্কায় রয়েছে আরও কয়েকটি বাজার। এই অবস্থায় সরকারের সর্বোচ্চ মহলকে কূটনৈতিক তৎপতার মাধ্যমে বন্ধ হওয়া শ্রম বাজার খোলার পাশাপাশি নতুন শ্রম বাজার সৃষ্টির তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।  বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশীরা অবস্থান করছে। এরমধ্যে মূলত ২৫টি হচ্ছে বাংলাদেশের বড় শ্রম বাজার। এগুলো হলো- সৌদি আরব, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্দান, সুদান, সিঙ্গাপুর, ইতালি, মৌরিতানিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, বলিভিয়া, কুয়েত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালদ্বীপ, দক্ষিণ কোরিয়া, মিসর, লিবিয়া, ইরাক, যুক্তরাজ্য, ব্রুনাই, মরিশাস ও জাপান। এরমধ্যে এ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে ৯টি। বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রম বাজারগুলো মধ্যে রয়েছে- ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, ওমান, বাহরাইন, মিসর, লিবিয়া ও ইরাক।  শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার পেছনে  অনেক কারণ রয়েছে।  এর মধ্যে অন্যমতম হচ্ছে শ্রমিকদের কল্যাণ কাজে সহযেগিতার হাত না বাড়িয়ে শ্রমিকদের দিয়ে ব্যবসা করা। কাজের পারমিট না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন অসদুপায়ে মাত্রারিক্ত লোক পাঠানো। যোগ্যতার অভাব, সরকারিভাবে সহযোগিতার সুযোগ না থাকা। পাঠানো শ্রমশক্তির সঠিক ডেটা না থাকাসহ আরও সমস্যা রয়েছে বলে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তাদের মতে, দক্ষতার অভাব, পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা না থাকা, ভাষা বুঝতে না পারা সে দেশের কালচারের সঙ্গে সমন্বয়হীনতাও অনেকাংশে দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রে যেখানে জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, কর্মযোগ্যতা না থাকাসহ রাজনৈতিক দৌরাত্ম্য শ্রমবাজারকে নষ্ট করার জন্য দাযী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, যে দেশে শ্রমবাজারে শ্রমিকদের প্রশিক্ষিত না করে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক উদ্দেশে লোক পাঠানো বন্ধ না করতে পারলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার নিজেই যেখানে শ্রমবাজারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সেখানে বাকিরা তো কিছুই না। শ্রমবাজারকে শক্তিশালী করতে হলে প্রতিটি দেশের সঙ্গে সরকারের সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে জবাবদিহিতামূলক কার্যক্রম চালু করলে সমস্যা সমাধান না হলেও অগ্রগতির সুবাতাস বইবে শ্রমবাজারে। সরকার বিভিন্ন দেশে শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোসহ যে যে দেশে শ্রমবাজার চালু করা যাবে সেখানে প্রত্যেক সরকার প্রধানের সঙ্গে সরকার সর্বোচ্চ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকার নিজে  লোক নেয় না যাদের শ্রমশক্তি বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করে সেখানে স্বচ্ছতা রেখে, নিজের জবাবদিহিতাকে সামনে রেখে শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিটের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সেখানে প্রেরণ করতে পারলে সমস্যা থাকার সম্ভবনা নেই। সেই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য বিভিন্ন কমিটি করে সমস্যা খুঁজে তা সমধানকল্পে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নতুন শ্রম বাজার খুঁজে বের করার জন্য ২০১৮ সালে ঢাকঢোল পিটিয়ে ৫৩টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ শ্রমবাজার গবেষণা সেল খোলা হয়েছিল। কিন্তু এটি মূলত অকার্যকরই রয়ে গেছে। গত সাত বছর ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে এস শ্রমবাজার গবেষণা সেল। অভিবাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বন্ধ ও স্থবির হয়ে যাওয়া শ্রমবাজার নিয়ে বিদেশি মিশনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ আর সমন্বয়ের অভাবই এ জন্য দায়ী। ইতালির শ্রমবাজার ॥ ইউরোপের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রম বাজার হিসাবে আবিভর্ূূত হয়েছিল ইতালি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই বেসরকারিভাবে গড়ে উঠেছিল এই শ্রম বাজার। বর্তমানে এই শ্রম বাজারটিও মুখ থুবড়ে পড়েছে। পরিপূর্ণভাবে বন্ধ না হলেও বাংলাদেশিদের অস্বচ্ছতার কারণে ভিসা দিচ্ছে না দেশটি। ঢাকায় ইতালি দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো বলা হয়েছে, বিপুলসংখ্যক জাল নথি বা ডকুমেন্টের কারণে ইতালি সরকার ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবরে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের অনুকূলে ইস্যুকৃত সব কর্ম অনুমোদনের (ওয়ার্ক পারমিট) বৈধতা স্থগিত করেছে, যা যথাযথ যাচাইকরণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। তবে চলতি বছরের মে মাসে ভিসা পেতে অপেক্ষায় থাকা প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর জন্য সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারণ (এমওইউ) সই করেছে ইতালি সরকার। গত ৬ মে দুইদিনের সফরে এসে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসি এই এমওইউ সই করে গেছেন। আরব আমিরাতের  শ্রমবাজার ॥ আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ না হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে এই দেশটিতে মাত্র ৬৭৬ জন কর্মী গেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত জুলাই-আগস্ট মাসে যেসব কর্মী সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেতে পারেননি, তাঁরাই সেপ্টেম্বরে গেছেন। সেপ্টেম্বরে কোনো ভিসাই দেয়নি দেশটি। জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশটির শহর দুবাইয়ে কয়েক বছর ধরে কর্মী নেওয়া বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে  প্রবাসীরা অংশ নেওয়ায় এক ধরনের চাপ  তৈরি হয়েছে। তবে এই শ্রমবাজারে অনানুষ্ঠানিকভাবেই ভিসা বন্ধ রেখেছে। আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ॥ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সৌদি আরবের পর সবচেয়ে জনপ্রিয় শ্রমবাজার হিসেবে পরিচিত ছিল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত চার লাখ ৯৪ হাজার ১৮০ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন। কিন্তু সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ২০২৩ সালের ৩১ মে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার  শ্রমবাজার। এতে বিএমইটির ছাড়পত্র হওয়ার পরও ১৬ হাজার ৯৯০ জন কর্মী যেতে পারেননি। তবে সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসে এই কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।  মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়। এমতাবস্তায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার কতটুকু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।  মালদ্বীপের  শ্রমবাজার ॥ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হয় মালদ্বীপের শ্রমবাজার। কিন্তু চালু হওয়ার তিন মাস পরই বন্ধ হয়ে যায় দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের  শ্রমবাজার। এতে ভোগান্তি পড়েন দালালের হাতে টাকা দেওয়া কর্মীরা। গত ২২ মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশন। এতে বলা হয়, মালদ্বীপ সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে। তবে কোটা বাড়ানো ও ভিসা চালু করতে হাইকমিশন চেষ্টা করছে। এই দুরবস্থার জন্য সুনির্দিষ্ট গবেষণা না থাকার পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশিদের অযোগ্যতার পাশাপাশি অনৈতিকতাকে দায়ী করছেন অভিবাসন খাত বিশ্লেষকরা। সেই সঙ্গে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে পর্যাপ্ত উদ্যোগ না থাকা এবং অভিবাসন কূটনীতিতে দক্ষতা না থাকাকেও বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।  বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের সদ্যবিধায়ী যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন,‘শ্রমবাজারকে কাজে লাগাতে হলে প্রতিটি দেশের সঙ্গে সরকারের সর্বেচ্চ পর্যায় থেকে কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে যে যে দেশের সঙ্গে শ্রমবাজার রয়েছে সেখানে সম্পর্ক বাড়ানোর মাধ্যমে বন্ধ থাকা শ্রমবজারগুলো চালু করা। তিনি বলেন,  সরকারি সংস্থা বোয়েসেলসের পাশাপাশি বৈধ রিক্রুটং এজেন্সিগুলোকে কাজের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি করা।  তিনি আরও বলেন,‘ বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি শ্রমবাজার হলো  সৌদিআরব। তারপরে দুবাই এবং মালয়েশিয়া। সেখানে সিন্ডিকেটের কারণে শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সেখানে শ্রমিকদের কল্যাণে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে বলে আমার মনে হয় না।’ অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর জনণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের শ্রমবাজারের বিষয়টি কখনো নিয়মতান্ত্রিকভাবে করা হয়নি। বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আমাদের পরামর্শ ছিল, শ্রমবাজারের জন্য একটি গবেষণা উইং তৈরি করা হোক। এই উইং নিয়মিত গবেষণা করবে। কিন্তু সেটি কখনোই তৈরি হয়নি।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো বাজার খুললেই চাহিদার বিষয়ে খোঁজ না নিয়ে, সেখানে লোক পাঠানোর  প্রবণতা বন্ধ করা উচিত। বেসরকারি উদ্যোগের ফলেই, দেশের বাইরে কোনোরকমে টিকে আছে বাংলাদেশের  শ্রমবাজার। তবে এক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় নানা অনিয়ম বাড়াচ্ছে ভোগান্তি। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন শিকদার বলেন, ‘তাইওয়ানে আমাদের মার্কেট আছে, হংকংয়ে আমাদের মার্কেট আছে ইউরোপে আমাদের মার্কেট আছে কেয়ার গিভার নার্সিংয়ে, আমরা কি এগুলো তৈরি করতে পারব। এই মুহূর্তে কি আমাদের ভোকেশনাল, টেকনিক্যাল ট্রেনিং আপ টু ডেট? মার্কেট ধরছে ভারতীয়রা, ফিলিপিনোরা। তাদের হিউজ ইনভেস্টর আছে।’ অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর জনকণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের শ্রমিকদের চাহিদা কমার অনেক কারণে রয়েছে। প্রথমত, পরিবেশ, অযোগ্যতা তো রয়েছেই। সে সঙ্গে জবাবদিহিতামূলক সিস্টেম না থাকায় সেখানে কে কি করছে, সেখানে আদৌ লোকবলের প্রয়োজন রয়েছে কিনা, শ্রমিকদের আকামা তথা কাজের পারমিট আছে কিনা এ সকল বিষয়গুলো জবাবদিহিতা নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এওইউ করে কিন্তু জিটুজি কোনো চুক্তি থাকে না। যা সমস্যার অন্যতম বড় কারণ! বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোও তাদের ব্যবসার কারণে সঠিক ইনফরমেশন দিতে চায়না। যা একজন শ্রমিকের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের শ্রমিকরা সরকারিভাবে যায়, সেখানে আমরা যদি তাদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের পরিবর্তে আস্তে আস্তে বাইলেটারিক রিভেনটেক এর দিকে না আসি তাহলে এটা আরও সংকুচিত হয়ে আসবে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে আসিফ মুনীর বলেন, ‘প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে অভিবাসন কূটনীতির ব্যাপারে  প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে প্রশিক্ষণগুলো হয়, যেমন ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমি। সেখানে যদি এটাকে বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।’ উন্নত দেশগুলোর বদলে যেসব দেশে বাংলাদেশি কর্মী আছে সেখানে দূতাবাসে লেবার এবং প্রেস কর্মকর্তা নিয়োগে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। ব্যক্তি কেন্দ্রিক বা পারিবারিকভাবে দেশের শ্রমবাজার চালু হয়েও শুরু দিকে বিশ্বে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীর চাহিদা ছিল অনেক। সময়ের সঙ্গে বিশ্ব যখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হচ্ছে, তখন বাংলাদেশি শ্রমবাজার পিছিয়েই পড়ছে। রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, সৌদি আরবে ভিসা বন্ধ। নতুন চাহিদাও কমে গেছে। দেশটি কী ধরনের ঘোষণা দেয়, সে জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কর্মী নিয়োগে তারা আরও যাচাই-বাছাই করতে পারে। তাই বিকল্প শ্রমবাজার চালু করতেই হবে।  অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ) -এর চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, বিদেশে কর্মসংস্থানে বাংলাদেশি নারীদের মূল গন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। অধিকাংশ নারীই যান গৃহকর্মী হিসেবে। তাদের কেউ কেউ নানা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসেন। যৌন নিপীড়নের অভিযোগও আছে। এতে নারীদের মধ্যে বিদেশে যাওয়ার উৎসাহ কমছে। তিনি বলেন, বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়ার তেমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নতুন শ্রমবাজার চালুর ক্ষেত্রেও তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। যেসব দেশে সম্ভাবনা আছে, সেটিও কাজে লাগানো হচ্ছে না।  রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)’র চেয়ারপার্সন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ড. তাসনিম সিদ্দিকী জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের শ্রমশক্তিকে কাজে লাগাতে হলে সর্বপ্রথম সিন্ডিকেট তুলে দেওয়াসহ প্রবাসীদের দক্ষতাকে বাড়াতে হবে। পাশাপাশি যত প্রকার অনিয়ম রয়েছে সব প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রবাসীদের সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া কিছু কিছু দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে সেগুলোকে ঠিক করতে হবে। তিনি আরও বলেন, তবে এঠাও ঠিক  যে এ বিশাল সম্ভবনাকে কাজে লাগানো শুধু সরকার একা ইচ্ছে করলেই পারবে বিষয়টি এমন না। সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে বহির্বিশ্বে নিজেদের ইমেজকে আরও সুসংহত করতে পারলে আশা করা যায় নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি করা যাবে।  বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও  প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছেন ১১ লাখের বেশি কর্মী। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ লাখে। তবে ২০২৪ সালে ৩ লাখ কমে হয় ১০ লাখ। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মোট ৪ লাখ ১০,৭৩১ জন কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। যা গত বছরগুলোর তুলনায় কম। যদিও ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জনশক্তি রপ্তানিতে দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ছিল।

adbilive
adbilive
তারেক-জোবাইদার মামলার রায় নিরপেক্ষ হয়নি ॥ হাইকোর্ট

তারেক-জোবাইদার মামলার রায় নিরপেক্ষ হয়নি ॥ হাইকোর্ট

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় অধস্তন আদালতের বিচার ‘নিরপেক্ষ হয়নি’ মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে সেই রায়ের ৫২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে অধস্তন আদালতের বিচারে নিরপেক্ষতাহীনতার বিষয়টি উঠে আসে। রায়ের পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলেন, বিচারিক আদালতে দ্রুতগতিতে সাক্ষ্য নেওয়া ও রায় ঘোষণা করা, -জোবাইদা রহমানকে নোটিস না করা এবং অভিযোগ গঠনে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। আদালত আরও বলেন, বিচারিক আদালতে দুই মাস চারদিনে ৪২ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আটদিনের মধ্যে রায় দেওয়ার এমন দ্রুতগতি ও সমাপ্তি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস তৈরি করে যে, বিচারকার্য নিরপেক্ষভাবে হয়নি। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায়-জোবাইদা রহমানের তিন বছর ও দুটি ধারায় তারেক রহমানের ৯ বছরের সাজা হয় বিচারিক আদালতে। তবে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ গত ২৮ মে যে রায় দেন তাতে তারেক রহমান ও -জোবাইদা রহমান উভয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া দ- থেকে খালাস পান। দুদক আইনের ২৬ (১) ধারা অনুযায়ী নোটিস দেওয়ার বিধান সম্পর্কে হাইকোর্ট বলেন, নোটিস দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। যেহেতু কোনো নোটিস দেওয়া হয়নি। তাই তাকে (-জোবাইদা রহমানকে) দোষী সাব্যস্তকরণ এবং সাজা আইন অনুসারে টেকে না এবং এটা বাতিলযোগ্য। আদালত বলেন, আপিলকারীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল তা অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ। ফৌজদারি কার্যবিধির ২২১ ধারার বিধানগুলো পালন করা হয়নি। অতএব এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ও সাজা বহাল রাখা যায় না। রায়ে তারেক রহমানের সাজা প্রসঙ্গে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের নজির অনুসারে যেহেতু মামলায় নানান অসঙ্গতি রয়েছে সেহেতু পুরো রায়টি বাতিলযোগ্য। তাই এক্ষেত্রে তারেক রহমানও খালাসের সুবিধা পেয়েছেন। এ বিষয়ে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমাদের দেওয়া যুক্তি আইনগতভাবে যে সঠিক ছিল সেটা হাইকোর্ট বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রমাণিত হলো। আমরা বলেছি তারেক রহমান ও -জোবাইদা রহমানের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছিল। জাস্টিস হারিড জাস্টিস বারিড। দ্রুত শুধু সাক্ষী নেওয়াই শেষ নয়, এখানে মোমবাতি জ্বালিয়েও সাজা দেওয়ার জন্য দ্রুত বিচারকাজ চালিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। গত ১৪ মে -জোবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদ-ের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জরিমানা স্থগিত করে ওইদিন আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিন দেওয়া হয়। এর আগের দিন ১৩ মে আপিল দায়েরের ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেন হাইকোর্ট। বিলম্ব মার্জনার পর -জোবাইদা রহমান সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলার বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমানকে দুই ধারায় মোট ৯ বছর ও জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের সাজা দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় তারেক রহমানকে তিন বছর এবং ২৭(১) ধারায় ছয় বছরের কারাদ- দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। জোবাইদা রহমানকে ২৭(১) ধারায় তিন বছরের কারাদ- ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নির্বাহী আদেশে তার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলই বাছাইয়ে ফেল

নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলই বাছাইয়ে ফেল

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করা নতুন ১৪৪টি দলের কোনোটিই প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইসিতে ৪৩ হাজার পৃষ্ঠার নথি জমা দিয়েও বাছাইয়ে ফেল করেছে।  ইসি বলছে দলগুলোর আবেদনের কাগজপত্রে ত্রুটি রয়েছে। তবে ত্রুটি সংশোধনে দলগুলোকে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ সাংবাদিকদের জানান।  তিনি বলেন, প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে অন্য দলগুলোকেও চিঠি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ১৫ দিন সময়ের মধ্যে যেসব ত্রুটিবিচ্যুতি আছে তা পূরণ করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনপ্রত্যাশী রাজনৈতিক দলগুলোকে আবেদন জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বেশকিছু দল সময় বাড়ানোর আবেদন করলে ২২ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ায় নির্বাচন কমিশন। ওই সময় পর্যন্ত এনসিপিসহ ১৪৪টি দল ১৪৭টি আবেদন করে। ইসি সূত্র জানায়, নিবন্ধনের জন্য ৪৩ হাজার ৩১৬ পৃষ্ঠার নথি সংবলিত আবেদন জমা দিয়েছিল এনসিপি। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন শর্ত পূরণ করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন- ট্রাকে করে নিয়ে সেগুলো আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে জমা দিয়েছিল দলটি। তার পরও নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করা জাতীয় নাগরিক পার্টি নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। তবে এনসিপিসহ ১৪৪টি রাজনৈতিক দলকেই ১৫ দিন সময় দিয়ে আবেদনের ঘাটতি পূরণে চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০টি। নির্বাচন কমিশনে নতুন দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ইসির যেসব শর্ত রয়েছে সেগুলো হচ্ছেÑ ১. দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে। ২. কার্যকর কমিটি থাকতে হবে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায়। ৩. সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা কিংবা মেট্রোপলিটন থানার কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের নথি দেখাতে হবে। ৪. দলীয় প্যাডে দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও দলীয় পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি জমা দিতে হবে। এসব শর্ত পূরণ করে আবেদন করার পর নির্বাচন কমিশন তা যাচাই-বাছাই শুরু করবে। নিবন্ধন শর্ত পূরণ করতে পারলে দলীয় প্রতীকসহ নিবন্ধন সনদ দেবে। শীঘ্রই ইসিতে সংশোধিত আবেদন জমা দেবে এনসিপি- আখতার ॥ শীঘ্রই নির্বাচন কমিশনে (ইসি) সংশোধিত আবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এ কথা জানান তিনি। আখতার হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনে যেসব শর্ত পূরণ করে আবেদন করতে হয় আমরা সেসব শর্ত পূরণ করে আবেদন করেছি। প্রাথমিক বাছাইয়ের পরে তারা আমাদের কিছু সাজেশন্স দিয়েছেন, পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। যেসব পর্যবেক্ষণে আমাদের গঠনতন্ত্রে একটা বিশেষ ক্লজ ইনসার্ট করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, দু-একটা অফিসের ক্ষেত্রে যেই ডিড (চুক্তি) হয়েছে সেখানে আমাদের পার্টির নাম সরাসরি মেনশন করা নেই। সে বিষয়গুলো ইসি আমাদের কাছে উপস্থাপন করেন। মাইনর কিছু বিষয় তারা আমাদের পর্যবেক্ষণে নিয়ে এসেছেন।  নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করা রাজনৈতিক দলগুলো হচ্ছে- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি), জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সর্ব-স্বেচ্ছা উন্নয়ন দল, কোয়ালিশন-ন্যাশনাল পার্টি (সিএনপি), জাস্টিস ফর হিউমিনিটি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ-তিসারী-ইনসাফ দল, বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি (বাজপ), বাংলাদেশ জনতা পার্টি-বিজেপি, বাংলাদেশ সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশ আজাদী পার্টি-বিএপি, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ ইসলামিক জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট পার্টি (বিডিএম), বাংলাদেশ বেস্ট পলিটিক্যাল পার্টি (বিবিপিপি), মানবিক বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (বিএসডিপি), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), গণদল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (বিএনডিপি), ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (ডিপি), বাংলাদেশ গণবিপ্লবী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), জনতার দল, জাতীয় ন্যায় বিচার পার্টি, বাংলাদেশ সমতা পার্টি, বাংলাদেশ সিটিজেন পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ইউনাইটেড পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-বিএনডিপি, বাংলাদেশ ইসলামী ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (বিআইডিপি), ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি (আইজিপি), জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট দল-এনএফএফ, বাংলাদেশ নাগরিক কমান্ড, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ফেডারেশন, নৈতিক সমাজ, বাংলাদেশ জাতীয় দল (বিজেডি), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ জাতীয় কৃষক শ্রমিক পার্টি, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল, বাংলাদেশ গ্রিন পার্টি, বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাকশন পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, নাকফুল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গণঅধিকার পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, নতুন ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ একাত্তর পার্টি, স্বাধীন বাংলা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস মুভমেন্ট, জাগ্রত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক প্রজন্ম, বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রজনতা পার্টি, খেলাফত ইসলাম, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু অধিকার, বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পার্টি, বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি।  এ ছাড়াও বাংলাদেশ রক্ষণশীল সমাজ (বিসিপি), জনতা কংগ্রেস পার্টি, বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণময় পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি (বাজাপা), বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তি ঐক্যদল, বাংলাদেশ জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক আন্দোলন পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, জাস্টিজ পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), বাংলাদেশ জেনারেল পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি (বিপিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ কৃষক পার্টি (কেএসপি), জনতার কথা বলে, ভাসানী শক্তি পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল (বাজদ), ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি, স্বাধীন জনতা পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ শান্তির দল, সংবিধান বিষয়ক জনস্বার্থ পার্টি সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), ডেমোক্র্যাটিক লীগ (ডিএল), বাংলাদেশ গণঅভিযাত্রা দল, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি (এনএলপি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), জনতা মহাজোট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতার ঐক্য, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, নিউক্লিয়াস পার্টি, ইউনাইটেড বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় ভূমিহীন পার্টি (বিএনএলপি), বাংলাদেশ মাতৃভূমি দল, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম), বাংলাদেশ পাক পাঞ্জাতন পার্টি (বিপিপি), সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), ন্যাপ ভাসানী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), জাতীয় পেশাজীবী দল (এসপিপি), বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্ট (বিজেএফ), বাংলাদেশ জাতীয় ইনসাফ পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি-ডিসিপি, ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ জনমত পার্টি, বাংলাদেশি জনগণের পার্টি, অহিংস গণআন্দোলন, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি ও মুসলিম সেভ ইউনিয়ন।

সৌদিতে নারী চালাবে উবার

সৌদিতে নারী চালাবে উবার

সৌদি আরবে নারী চালকদের দিয়ে সেবা আনছে উবার। এই নারী চালকদের সেবা শুধু নারীরা নিতে পারবেন। সোমবার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের নতুন এ কার্যক্রম সৌদিতে শুরু হবে। উবার সৌদির রিয়াদে সোমবার ‘নারীদের দ্বারা, নারীদের জন্য’ শীর্ষক একটি বিশেষ ইভেন্টের আয়োজন করে। সেখান থেকেই আসে এ ঘোষণা। ২০১৮ সালে সৌদি সরকার নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়। ওই সিদ্ধান্তের সাত বছর পর দেশটিতে নারী চালকদের ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে উবার। ধীরে ধীরে দেশটির সব বড় শহরে এ সেবা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যখন সেবাটি সম্পূর্ণ শুরু হবে তখন নারী কাস্টমাররা তাদের যাত্রার জন্য নারী চালককে বাছাই করতে পারবেন। এ ছাড়া আগে থেকেও ট্রিপ বুক করে রাখতে পারবেন তারা। ২০১০ সালে উবার প্রতিষ্ঠিত হয়। যা পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়। প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত ৫৮ বিলিয়ন যাত্রা সম্পন্ন করেছে। উবারের দেখাদেখি আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও যোগাযোগ সেবায় নামে। ইরাক এবং ইরানে আগে থেকেই নারী চালক সেবা চালু আছে উবারের। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া যারা চলাচল করেন তাদের মধ্যে সেবাটি অনেক জনপ্রিয়। এখন সৌদিতেও এটি চালু হতে যাচ্ছে। সৌদি আরবের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেদের ব্যবসা প্রসারের যে চিন্তা উবার করছে সেখান থেকেই শুধু নারীদের জন্য নারী চালক সেবা চালু করছে তারা।- গালফ নিউজ অবলম্বনে

একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ডলারের দাম

একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ডলারের দাম

বাজারে এক সময় ডলারের জন্য হাহাকার ছিল। বৈদেশিক লেনদেন সামলাতে গিয়ে ব্যাংকগুলো ছুটতো এক্সচেঞ্জ হাউসের পেছনে। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই।  ডলার সংকটের কঠিন সময় পার করে বাংলাদেশ এখন এক ধরনের মুদ্রা স্বস্তির মধ্যে প্রবেশ করেছে। যেখানে টাকার মান বাড়ছে, রিজার্ভ বাড়ছে, আর বৈদেশিক বাণিজ্যে শৃঙ্খলা ফিরছে। ব্যাংকগুলোর কাছে এখন পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন ডলার এখন মার খাচ্ছে টাকার কাছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের অর্থনীতিতে ‘অবমূল্যায়নের যুগ’ থেকে ‘স্থিতিশীল বিনিময় হারে’ প্রবেশের সম্ভাবনাই এখন দৃশ্যমান।  ঐতিহাসিক নিলামের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে বেশি দামে ডলার কিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কেট ফ্লোর কার্যত তুলে দেওয়ার পর সোমবার এক দিনেই মুদ্রাটির দাম ১.৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ডলার কেনে। এদিন ১২১.৫০ টাকা দরে ১৭১ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপের পর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সোমবার রেমিটেন্সের ডলার কেনার ক্ষেত্রে আগেরদিনের ১১৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০.৮০ টাকা পর্যন্ত দাম দিয়েছে।  ব্যাংকাররা বলছেন, গত সপ্তাহে ডলারের দাম প্রায় ৩ টাকা কমে যাওয়ার জেরে নিলামে বেশি দামে ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশি রেট দিয়ে ডলার কিনে বাজারে দাম বাড়ানোর সিগন্যাল দেয়। সোমবার কোনো নিলাম অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বাজারে রবিবারের নিলামের প্রভাব ছিল স্পষ্ট, কারণ ব্যাংকগুলো রেমিটেন্সের ডলার কেনার ক্ষেত্রে দর বাড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহমেদ বলেন, ‘আমরা বাজার থেকে কী পরিমাণ ডলার কিনব, তা এখনও নির্দিষ্ট করিনি।