ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১

জাতীয়
বিজয়ের জব্বার যেভাবে দমিয়ে রেখেছিলেন অভ্রর মেহেদীকে

বিজয়ের জব্বার যেভাবে দমিয়ে রেখেছিলেন অভ্রর মেহেদীকে

বাংলা ভাষার ডিজিটাল বিপ্লবের অন্যতম অগ্রদূত মেহেদী হাসান খান ও বিজয় কিবোর্ডের নির্মাতা মোস্তফা জব্বারের মধ্যে বহু বছর ধরে চলা বিরোধের মূল কারণ কী? বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার নিয়ে যে সংঘাত, তার পেছনে রয়েছে বাণিজ্যিক স্বার্থ, কপিরাইট বিতর্ক এবং প্রযুক্তির গণতন্ত্রায়নের লড়াই। বিগত শতকের শেষের দিকে ও নতুন শতকের শুরুতে বাংলা টাইপিং ছিল বেশ ব্যয়বহুল এবং সীমাবদ্ধ। বিজয় কিবোর্ড দীর্ঘদিন ধরে বাংলা টাইপিংয়ের একমাত্র জনপ্রিয় সফটওয়্যার হিসেবে আধিপত্য বিস্তার করছিল, যার জন্য ব্যবহারকারীদের মোটা অঙ্কের টাকা গুণতে হতো। ঠিক সেই সময় ২০০৩ সালে, মাত্র উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র মেহেদী হাসান খান নিয়ে আসেন অভ্র কিবোর্ড, যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অভ্রর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল এটি ইউনিকোড-ভিত্তিক, যার ফলে একবার টাইপ করা লেখা যে কোনো ডিভাইসে সহজেই দেখা যেত। অভ্র আসার পরই বাংলা টাইপিং গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠে এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে এই জনপ্রিয়তা বিজয়ের একচেটিয়া বাজারকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল, বিজয়ের নির্মাতা মোস্তফা জব্বার দাবি করেন যে, অভ্র কিবোর্ড বিজয়ের লেআউট চুরি করেছে এবং এটি কপিরাইট লঙ্ঘন করেছে। তিনি অভ্র নিষিদ্ধ করার জন্য নানা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং অভ্র`র বিরুদ্ধে কপিরাইট মামলা দায়ের করেন। অভ্রর জনপ্রিয়তার কারণে বিজয়ের বাজার ক্ষতির মুখে পড়ে, বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও অভ্র ব্যবহারের দাবি উঠতে থাকে। বিজয় এতদিন ধরে বাংলার একমাত্র স্বীকৃত সফটওয়্যার হিসেবে জায়গা ধরে রাখলেও অভ্র আসার পর সেটি অনেকাংশেই পরিবর্তিত হয়। মেহেদী হাসান খান এই বিতর্কের পর অভ্র থেকে বিজয় লেআউটটি সরিয়ে ফেলেন, এবং মামলাটিও পরবর্তীতে প্রত্যাহার করা হয়। তবে অভ্র পুরোপুরি নতুন কোডিং ও ইউনিকোড-ভিত্তিক হওয়ায় এটি বিজয়ের সঙ্গে তুলনীয় নয় বলে প্রযুক্তিবিদেরা মত প্রকাশ করেন। অভ্রর মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে বিনামূল্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মেহেদী হাসান খান ও তার দলকে ২০২৪ সালে একুশে পদক প্রদান করা হয়। প্রথমে মেহেদী এককভাবে মনোনীত হলেও, তিনি তার সহকর্মী রিফাত নবী, তানভীন ইসলাম সিয়াম ও শাবাব মোস্তফার নামও একুশে পদকের জন্য অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। এই স্বীকৃতি আসতে দীর্ঘ সময় লেগে গেলেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, পূর্ববর্তী সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে মোস্তফা জব্বারের অবস্থান থাকায় অভ্রর অবদান এতদিন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত হয়নি। এই বিরোধ শুধু দুজন প্রযুক্তিবিদের মধ্যে নয়, এটি আসলে বাণিজ্যিক সফটওয়্যার বনাম ওপেন সোর্স প্রযুক্তির মধ্যে লড়াইয়ের প্রতিফলন। বিজয় একটি বাণিজ্যিক সফটওয়্যার, যা কিনতে অর্থ খরচ করতে হয়, অন্যদিকে অভ্র একটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার, যা সবার জন্য বিনামূল্যে উন্মুক্ত। বছরের পর বছর ধরে এই বিতর্ক চললেও, বর্তমানে অধিকাংশ ব্যবহারকারী অভ্রর সুবিধা গ্রহণ করছেন এবং এটি বাংলা ভাষার ডিজিটাল প্রসারের ক্ষেত্রে অপরিসীম ভূমিকা পালন করেছে। একুশে পদক প্রাপ্তির মাধ্যমে মেহেদী হাসান খান ও তার দল যে অবশেষে তাদের প্রাপ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন, এটি বাংলা ভাষার জন্য নিঃসন্দেহে এক বিশাল অর্জন। ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/A-1vaSm1f-k?si=2QBv1fHqW5-W43Xu

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ

ভারত ও বাংলাদেশের টানাপোড়েন কমাতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বৈঠকে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।  বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তৌহিদ হোসেন। এই বৈঠককালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি। সাংবাাদিকদের তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি তাকে (জয়শঙ্কর) আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বলেছি, আমাদের তো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে, মন্ত্রী পর্যায়েও কিন্তু আমাদের একটা মেকানিজম আছে। আমি তাকে বলেছি, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতবার আপনাদের দেশে গেছেন, এখন আপনার আসার কথা ঢাকায়। আপনি সময় জানালে আমরা ব্যবস্থা করব। আমন্ত্রণের বিষয়ে জয়শঙ্কর কী বলেছেন জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, তিনি ইতিবাচক। তৌহিদ হোসেন বলেন, শুরুতে তো (অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর) যে টানাপোড়েন ছিল সেটা সবাই জানে। আমরা স্বীকারও করেছিলাম। ব্যবসা মোটামুটি পিকআপ করেছে। দেখা গেছে যে, আগের লেভেলে পৌঁছে গেছে, এগুলো ইন্ডিকেশন। কিছু টানাপোড়েন এখনো রয়ে গেছে, যেমন-ভিসাসহ কিছু সমস্যা আছে।

রেকর্ড মাত্রায় মুসলিমবিদ্বেষ বেড়েছে যুক্তরাজ্যে

রেকর্ড মাত্রায় মুসলিমবিদ্বেষ বেড়েছে যুক্তরাজ্যে

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাজ্যে মুসলিমবিদ্বেষ রেকর্ড মাত্রায় বেড়েছে। দেশটিতে গত বছর প্রায় ছয় হাজার মুসলিমবিদ্বেষের ঘটনা ঘটেছে, যা এর আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ‘টেল মামা’ নামে একটি সংগঠন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। ইসলামভীতি থেকে সংঘটিত নানা ঘটনার ওপর নজর রাখে এমন একটি সংগঠন ‘টেল মামা’। ২০১২ সালে এই সংগঠনটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে নারীদের তুলনায় পুরুষরা বেশি মুসলিমবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। গাজাযুদ্ধ শুরু হওয়া ও সাউথপোর্ট হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাজ্যে মুসলিমবিদ্বেষী কথাবার্তা অনেক বেড়েছে। ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র এ পরিস্থিতিকে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক ঘটনা যেখানেই ঘটুক সরকার তা নির্মূল করতে চায়। টেল মামা সংগঠনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে ৬ হাজার ৩১৩ টি মুসলিমবিদ্বেষের ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি। এসব ঘটনার মধ্যে ৫ হাজার ৮৩৭ টি অভিযোগ যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে টেল মামা। এছাড়া তারা এমন ৩ হাজার ৬৮০ টি ঘটনার কথা জেনেছে, যা দুই বছর আগের তুলনায় ৭২ শতাংশ বেশি। টেল মামার পরিচালক ইমান আতা বিবিসিকে জানান, যুক্তরাজ্যে মুসলিমদের এক বড় অংশ সড়ক ও অনলাইনে মুসলিমবিরোধী ঘৃণার শিকার হচ্ছেন। ঘৃণার শিকার এসব মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানো ও তাঁদের জন্য কাজ করা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন সংগঠনটির পরিচালক। জনগণকে ঘৃণা ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। মুসলিমবিদ্বেষের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘মুসলিমদের ওপর হামলা ও ঘৃণার প্রকাশ সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং আমাদের সমাজে এর কোনো জায়গা নেই।’

পাওনা ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার না দিয়ে উল্টো বাংলাদেশকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে ধনী দেশগুলো!

পাওনা ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার না দিয়ে উল্টো বাংলাদেশকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে ধনী দেশগুলো!

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ইন্টারন্যাশনালের এক বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, শিল্পোন্নত ও পরিবেশ দূষণকারী দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৫৮ ট্রিলিয়ন ডলার। অথচ এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিশোধ না করে উল্টো উন্নয়নের নামে বাংলাদেশকে ৭৮ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণের ফাঁদে ফেলে দিয়েছে ধনী দেশগুলো। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জন্য আরও গভীর ও বিপজ্জনক। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ১৭ শতাংশ ভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে তলিয়ে যেতে পারে এবং বাস্তুচ্যুত হতে পারে অন্তত দুই কোটি মানুষ। অ্যাকশন ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশ বৈদেশিক ঋণের চাপে জর্জরিত ছিল। এসব দেশ জাতীয় উন্নয়ন বিসর্জন দিয়ে ধনী দেশগুলোর কাছে ১৩৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। জলবায়ু দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর পাওনা রয়েছে ১০৭ ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে এই অর্থ না আসার ফলে বাংলাদেশকে জাতীয় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জলবায়ু কর্মসূচিসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশি ঋণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছে। ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/XaeUPg_LsUg?si=CHVpouq5wfuAT3a8